অনলাইন ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের বন্দরে পাষান্ড স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজনদের অমানুষিক নির্যাতন সইতে না পেরে ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নববধূ বিথী আক্তার (১৯) স্বামীর নিজ ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ১৮ এপ্রিল সোমবার সকাল ১১টায় বন্দর থানার ২৭ নং ওয়ার্ডস্থ মুরাদপুর এলাকায় এ আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটে।
এলাকাবাসী মাধ্যমে ধামগড় ফাঁড়ীর পুলিশ সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ওই নববধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। আত্মহননকারি নববধূ বিথী আক্তার সোনারগাঁ থানার মহজমপুর এলাকার সিএনজি চালক কফিল উদ্দিন মিয়ার মেয়ে বলে জানা গেছে।
আত্মহত্যার ঘটনার পর থেকে পাষান্ড স্বামীসহ শ্বশুড় বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় আত্মহননকারি নববধূর পিতা কফিল উদ্দিন বাদী হয়ে পাষন্ড স্বামী ও শ্বশুড়/ শাশুড়ীসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনা আইনে এ মামলা দায়ের করেন।
তথ্য সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ মাস পূর্বে সোনারগাঁ থানার মজমপুরস্থ উত্তর কাজীপাড়া এলাকার কফিল উদ্দিন মিয়ার মেয়ে বিথী আক্তার (১৯) এর সাথে বন্দর থানার ২৭ নং ওয়ার্ডের মরাদপুর এলাকার নূর মোহাম্মদ মিয়ার ছেলে আশিক (২৫) এর বিয়ে হয়। ৫ মাসের সংসারে নববধূ বিথী আক্তার ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিয়ের সময় মেয়ে সুখের কথা চিন্তা করে পিতা কফিল উদ্দিন স্বামী আশিক ও তার পরিবারকে নগদ ৩লাখ টাকা প্রদান করাসহ একটি খাট, একটি ড্রেসিন টেবিল ও দেড় ভরি স্বর্ণালংকার প্রদান করে। গত ২৮ মার্চ শাশুড়ি আয়েশা বেগম ও শ্বশুড় নূর মোহাম্মদ এর প্ররোচনায় যৌতুক লোভী স্বামী আরো ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে।
এ নিয়ে প্রায় সময় উল্লেখিত বিবাদীরা নববধূ বিথী আক্তারকে মারধর করতো। পরবর্তিতে পিতা কফিল উদ্দিন মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন সময়ে দাবিকৃত যৌতুকের টাকা প্রদান করে। এর ধারাবাহিকতায় ১২ এপ্রিল শাশুড়ী আয়েশা বেগম অন্তঃসত্ত্বা নববধূ বিথীকে প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করে। পরে পাষন্ড স্বামী আশিকের বড় দুই ভাই আরিফ ও শামীম এবং তাদের পিতা শ্বশুড় নূর মোহাম্মদসহ অজ্ঞাত নামা ২/৪ জন নববধূকে গালাগালি করে। ওই সময় নববধূ বিথী আক্তার ভাসুর ও শ্বশুড়কে গালাগালি করতে নিষেধ করলে ওই সময় পাষন্ড স্বামী আশিক ক্ষিপ্ত হয়ে নববধূকে পিটিয়ে নিলাফুলা জখম করে এবং উল্লেখিত যৌতুক লোভী পরিবার নববধূ বিথীকে বাচ্চা নষ্ট করার কথা বলে। এর ধারাবাহিকতায় ১৮ এপ্রিল সোমবার সকাল ৯টায় বন্দর থানার মুরাদপুর ভূঁইয়াবাড়ীতে স্বামী আশিক ও শাশুড়ী আয়েশা বেগম নববধূকে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চরম ভাবে অপমান করাসহ নানান ভাবে হুমকি ধমকি দেয়।
এ ঘটনায় ওই দিন বেলা ১১টায় নববধূ বিথী আক্তার পাষন্ড স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজনদের অমানুষিক নির্যাতন সইতে না পেরে নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে কাপড় পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
এ ব্যাপারে বন্দর থানা অফিসার ইনচার্জ দীপক চন্দ্র সাহা গণমাধ্যমকে জানান, নববধূর লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। আত্মহত্যার ঘটনার পর থেকে স্বামীসহ শ্বশুড় বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। আমাসীদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাংলার বিবেক /এম এস
Leave a Reply