অনলাইন ডেস্ক : পরীক্ষার এক ঘণ্টা আগেই হোয়াটসঅ্যাপে আসে প্রশ্নের সমাধান। প্রবেশপত্রের পেছনে উত্তর লিখে নিয়োগপ্রার্থী ঢোকেন হলে। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে জড়িত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরেরই তিন কর্মচারী। সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বিসিএস ক্যাডার কলেজ শিক্ষকেরও। এক পরীক্ষার্থীসহ চক্রটির চারজনকে গ্রেফতার করেছেন গোয়েন্দারা।
গত ১৩ মে অনুষ্ঠিত হয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পরীক্ষা। এতে অংশ নেন প্রায় পৌনে দুই লাখ চাকরিপ্রার্থী।
নিয়োগ পরীক্ষাটিতে প্রশ্নফাঁস হয়েছে এমন তথ্য ছিল গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের কাছে। ইডেন মহিলা কলেজে অভিযান চালিয়ে সুমন জমাদ্দাদ নামে একজনকে আটক করা হয়। তার প্রবেশপত্রে ছোট ছোট অক্ষরে লেখা ছিল উত্তর।
সুমনকে আটকের পর প্রশ্নফাঁসের চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় গোয়েন্দারা। তার মোবাইল চেক করে দেখা যায় পরীক্ষা শুরুর ১ ঘণ্টা আগেই একটি নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ৭০টি এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর চলে এসেছে।
তার দেয়া তথ্যে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় পটুয়াখালীর খেপুপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে। এ দুজনের দেয়া তথ্যে বেরিয়ে আসে মূল হোতাদের নাম।
গোয়েন্দারা জানতে পারেন, প্রশ্নফাঁসে জড়িত খোদ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের কয়েকজন। তারা হলেন- অধিদফতরের উচ্চমান সহকারী আহসান হাবীব, অফিস সহকারী নওশাদুল ইসলাম এবং ৩১তম বিসিএস ব্যাচের শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা চন্দ্র শিখর হালদার। এর বাইরে পটুয়াখালী সরকারি কলেজের শিক্ষক রাসেদুল ইসলামের নামও এসেছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, সে যার কাছ থেকে পেয়েছে তাকে আমরা গ্রেফতার করেছি এর সঙ্গে কিছু স্কুল ও কলেজের শিক্ষক জড়িত রয়েছেন এবং মাউশির ডিজি অফিসেরও ৩ জন কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন। সবকিছু মিলিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করেছি। এরমধ্যে একজনকে আমরা রিমান্ডে নিয়েছিলাম; সে সব কিছু স্বীকার করেছে। আমাদের কাছে আরও তিনজন আছে, বাকিদেরকেও আমরা গ্রেফতার করব।
হারুন অর রশিদ আরও বলেন, মাউশির ডিজির কাছে আমি নিজে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেছি। সেই সঙ্গে শিক্ষা সচিবের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। কে প্রশ্নটি পেয়েছে, কে কীভাবে প্রশ্ন আউট করেছে সবকিছু আমি উনাদেরকে জানিয়েছে, এখন উনারা কী করবেন সেটা তাদের বিষয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের এ নিয়োগ পরীক্ষাটি বাতিলের জোর দাবি উঠেছে।
বাংলার বিবেক /এম এস
Leave a Reply