মণিরামপুর প্রতিনিধি : যশোরের মণিরামপুরে মাধ্যমিক স্তরের একটি মাদরাসার অন্তত ২০ ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে।
গত ১০ মাসে উপজেলার পাড়িয়ালি আদর্শ বালিকা দাখিল মাদরাসার ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির এসব ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়। তাদের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির দুজন, সপ্তম শ্রেণির চারজন, অষ্টম শ্রেণির ছয়জন, নবম ও দশম শ্রেণির চারজন করে শিক্ষার্থী রয়েছে। মাদরাসা সুপার আব্দুল হালিম এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পাড়িয়ালি আদর্শ বালিকা দাখিল মাদরাসার শিক্ষকরা দাবি করেছেন, অভিভাবকরা মেয়েদের অন্যত্র নিয়ে গিয়ে গোপনে বিয়ে দিয়েছেন।
মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুল হালিম জানান, ‘আমার প্রতিষ্ঠানে মাধ্যমিক স্তরে ১৫০ জন ছাত্রী রয়েছে। করোনার বন্ধে কয়েক ছাত্রীর বিয়ে হয়ে যাওয়ার খবর টুকটাক পাচ্ছিলাম। আমরা কর্মস্থলে ছিলাম না বলে খবর নিতে পারিনি। গত ১ নভেম্বর অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়ার জন্য মাদরাসা খোলা হয়। এরপর কয়েকজন ছাত্রী না আসায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। তখন হিসাব নিয়ে দেখি ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত অন্তত ২০ জনের বিয়ে হয়েছে।’
হালিম বলেন, ‘এর আগে কয়েকবার ছাত্রীদের বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছি। থানা থেকে পুলিশ এনে এক ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করেছি। কিন্তু পরে আবার অভিভাবকরা বাইরের এলাকায় নিয়ে গোপনে তাদের বিয়ে দিয়েছেন।
মাদরাসার শিক্ষক অম্বরীশ রায় বলেন, ‘ঋতু নামের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্বজনরা যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাট এলাকায় আত্মীয়র বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দিয়েছেন। বাইরের এলাকায় হওয়ায় আমরা খবর পেয়েও কিছু করতে পারিনি।’
মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘করোনার বন্ধে কতজন ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে তেমন কোনো তথ্য কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা আমাদের জানাননি। এ ব্যাপারে কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।’
উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মৌসুমী আক্তার বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে গতকাল (১ ডিসেম্বর) পর্যন্ত আমরা এলাকায় ১৭টি বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে সেগুলো বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু পাড়িয়ালি আদর্শ বালিকা দাখিল মাদরাসার ছাত্রীদের বিয়ের ব্যাপারে মাদরাসার সুপার আমাদের কোনো খবর দেননি।’
বাংলার বিবেক ডট কম – ২ ডিসেম্বর, ২০২০
Leave a Reply