আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সারা ভারত কৃষক সভা সহ ৩৫টি সংগঠনের ডাকা ভারত সরকারের কৃষি আইনের বিরোধিতার সমর্থন বিভিন্ন দেশে ছড়িয়েছে। কনাডা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিক্ষোভরত লক্ষ লক্ষ কৃষকদের প্রতি সমর্থন আসতে শুরু করেছে।
সর্বপ্রথম এই বিক্ষোভের প্রতি সমর্থন জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কানাডায় বসবাসকারীদের বড় অংশ ভারতের পাঞ্জাব থেকে এসেছেন। তাই কানাডার রাস্তায় রাস্তায় ভারতের কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে জমায়েত দেখা যাচ্ছে।
কানাডা সরকার কেন ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মুখ খুলছে এই প্রশ্ন তুলেছে ভারত সরকার। এর পরেই বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রবাসী ও ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও ব্যাপকভাবে কৃষক বিক্ষোভের প্রতি সমর্থন জানাতে থাকেন।
উত্তর ও পশ্চিম ভারতের কৃষক পরিবারগুলি ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বেশি সমৃদ্ধশালী ও দিনপ্রতি রোজগার বেশি। এই সব কৃষক পরিবারের সদস্যরা ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে। ফলে আন্দোলনটি ক্রমে আন্তর্জাতিক ব্যাপকতা লাভ করছে।
ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লি ঘিরে রেখে প্রায় ১২ লক্ষ কৃষক এই আইনটির বাতিল চেয়ে বিক্ষোভরত। কোনওভাবেই সরকারের সঙ্গে আপোষ মীমাংসায় রাজি না হওয়ায় বিতর্ক আরও বাড়ছে। এই ঘেরাও অভিযান এক সপ্তাহে পড়ল। গত সাত ধরে ভারতের তিনটি রাজ্য পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ কৃষক রাজধানী দিল্লি ঘিরে রেখে দাবি আদায়ে অনড়।
তাৎপর্যপূর্ণ, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশ বিজেপি শাসিত। এই দুই রাজ্যের সরকার প্রথম দিকে কৃষক লং মার্চ আটকে রাখতে চেয়ে আন্তঃরাজ্য সীমানায় বিরাট পুলিশ ব্যারিকেড বসায়। সেই বাধা উড়িয়েই দিল্লির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছেন কৃষকরা। আন্দোলনে সামিল হতে রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড থেকে আরও হাজার হাজার কৃষক দিল্লির দিকে যাত্রা শুরু করেছেন।
ভারতের এনডিএ সরকারের প্রধান শরিক বিজেপির দাবি, কৃষি আইনের সংস্কার আদতে কৃষকদের অর্থনৈতিক মান কে আরও উন্নয়ন করবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, কোনওভাবেই এই আইন কৃষকদের ক্ষতি করবে না। আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী সংগঠনগুলি ভুল বুঝিয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা মানতে চাননি কৃষি আইনের বিরোধিতা করা ১২ লক্ষের বেশি চাষী।
ঘোরতর এই পরিস্থিতির মাঝে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরের সঙ্গে কৃষক নেতাদের বৈঠক ব্যর্থ হয়। বিক্ষোভ আরও জোরদার হয়েছে।
বাংলার বিবেক ডট কম – ২ ডিসেম্বর, ২০২০
Leave a Reply