এসএম বিশাল: রাজশাহী মাদারল্যান্ড হাসপাতালের চিকিৎসক ফাতেমা সিদ্দিকা গত ২৮ নভেম্বর নগরীর রাজপাড়া থানায় একটি মামলা করেন। এতে তিনি দাবি করেন, তার ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) ফজিলাতুন নেসা মেরি (৪৫) চেম্বারের ড্রয়ার থেকে এক লাখ টাকা চুরি করেছেন।
এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ মেরিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। তবে মেরির স্বজনদের দাবি, প্রায় সাত মাস আগেই চাকরি ছেড়েছেন মেরি। ব্যক্তিগত ক্রোধের বশবর্তী হয়ে ডা. ফাতেমা সিদ্দিকা মেরির নামে চুরির মামলা দিয়েছেন। তাই মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য মেরির ভাই মাসুদ আলী পুলক রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।
নগরীর নতুন বিলশিমলা এলাকার বাসিন্দা মাসুদ আলী পুলক লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার বড় বোন মেরি গত আনুমানিক ১২ বছর ধরে মাদারল্যান্ড হাসপাতালের ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার পি.এ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চলতি বছরের গত ১৭ মে চিকিৎসকের বোনদের সাথে কথাকাটাকাটি এবং মনোমালিন্যের জন্য চাকরি ছেড়ে দেন।
এরপর ডা. ফাতেমা একাধিকবার কাজে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। তার বোন চাকরি করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৭ আগস্ট ফাতেমা সিদ্দিকা তার বোনের নামে নগরীর রাজপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি তদন্ত করেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হায়দার আলী। তিনি উভয়পক্ষকে ১৯ তারিখে থানায় উপস্থিত হতে বললে তার বোন থানায় হাজির হন। কিন্তু ডা. ফাতেমা সিদ্দিকা যাননি। কিন্তু পরে ২৮ নভেম্বর আবার রাজপাড়া থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে, ২৭ অক্টোবর টাকা চুরি হয়। অথচ মামলা দায়ের করেছেন এক মাস পর ২৮ নভেম্বর রাতে। পুলিশ প্রভাবিত হয়ে তদন্ত ও স্বাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়াই তার বোনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠান এবং বর্তমানে তিনি মিথ্যা মামলায় কারাভোগ করছেন। এখন তার বোনের পুরো পরিবার দূর্বিসহ ও অসহায় জীবনযাপন করছেন। তিনি মামলাটি তদন্ত করে দোষিদের শাস্তি ও তার বোনকে ন্যায্য বিচার পাইয়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদারল্যান্ড হাসপাতালের অপর এক কর্মাচী জানান, ফজিলাতুন নেসা মেরি ১২ বছর থেকে সততার সাথে তার দায়ীত্ব পালন করে আসছেন। এমন অবিশ্বাস্য ঘটনা তার দ্বারা হতে পারে না।
কোথাও ভুল হচ্ছে বলেও জানান তিনি। বিলশিমলা এলাকার স্থানীয়রা বলেন, মেরিকে আমরা ছোট থেকে চেনি। পাঁওয়াক্ত নামাজ-কালামসহ পর্দার মধ্যে দিয়ে চলাফেরা করেছেন। এ ধরনের মিথ্যা মামলার জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় তারা।
এ বিষয়ে নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদত হোসেন খান বলেন, মামলার তদন্ত করা হয়েছে। এসআই মকবুল তদন্ত করেছেন। এখনও তদন্ত হচ্ছে। আগে অনুসন্ধান, এখন তদন্ত চলছে। তিনি বলেন, আমি কোন অপরাধ করিনি। অপরাধ করলে আমাকে শাস্তি পেতে হবে।
বাংলার বিবেক.ডট কম-০৩ ডিসেম্বর ২০২০
Leave a Reply