1. admin@zzna.ru : admin@zzna.ru :
  2. md.masudrana2008@gmail.com : admi2017 :
  3. info.motaharulhasan@gmail.com : motaharul :
  4. email@email.em : wpadminne :

সম্পূর্ণ ডিজিটাইজ হচ্ছে শেয়ারবাজার

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ২২৫ বার

অনলাইন ডেস্ক : দেশে প্রথম ১৯৫৬ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (ডিএসই) নাম নিয়ে শেয়ারবাজারের আনুষ্ঠানিক লেনদেন শুরু হয় নারায়ণগঞ্জে। স্বাধীনতার পর নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে ১৯৭৬ সালে মাত্র ৯টি তালিকাভুক্ত কম্পানি নিয়ে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে ডিএসই। আর ১৯৯৫ সালে জন্ম হয় দেশের দ্বিতীয় শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই)। কিন্তু দুই শেয়ারবাজারেই জন্মের পর থেকে এখনো কাগুজে রীতি চলছে। দেশের প্রায় সব সেক্টর ডিজিটাল হলেও এর ছোঁয়া লাগেনি শেয়ারবাজারে।

দেশের শেয়ারবাজার যে কতটা পিছিয়ে আছে, এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হতে পারে সর্বশেষ করোনাকালের লেনদেন বন্ধ রাখা। ২০২০ সালে শেয়ারবাজার ৬৬ দিনের জন্য বন্ধ ছিল। করোনায় সাধারণ ছুটির মধ্যে ব্যাংক খোলা থাকলেও বন্ধ ছিল শেয়ারবাজার। বিশ্বের কোনো শেয়ারবাজার করোনা সংকটে এত দীর্ঘ সময় লেনদেনবিহীন ছিল না। এর প্রধান কারণ সেই কাগুজে লেনদেন। লেনদেনের জন্য প্রধান সংস্থাগুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগ ছিল না। বহির্বিশ্বের ৫০ শতাংশ শেয়ারবাজারের লেনদেন যেখানে অনলাইনে হয়, বাংলাদেশের অবস্থান সেখানে নগণ্য। এগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে পুরো শেয়ারবাজারকে ‘ডিজিটাল’ করে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য সরকার বিশ্বব্যাংককে সঙ্গে নিয়ে ‘ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন অব দ্য বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মাত্র ৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দের এই প্রকল্পে পুরো শেয়ারবাজারে আমূল পরিবর্তন আসবে।

এ ব্যাপারে বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের মৌলিক ইচ্ছা হলো শেয়ারবাজারকে সম্পূর্ণ ডিজিটাল করা। এর জন্য যা যা করতে হবে তার সব আমরা করব। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ মাত্র শুরু হলো। আমরা দেশের শেয়ারবাজারকে ঢেলে সাজাতে চাই। আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা, দক্ষতা বাড়বে, জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। অপারেশন ব্যয় কমে আসবে। কারসাজিচক্র আর মানুষের টাকা মেরে দিতে পারবে না।’

প্রকল্পের ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব (পুঁজিবাজার) ড. নাহিদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘করোনাকালে পৃথিবীর মধ্যে যে দু-তিনটি দেশের শেয়ারবাজার বন্ধ ছিল, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এটি খুবই দুঃখজনক। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের শেয়ারবাজারকে সম্পূর্ণরূপে ডিজিটাল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা তা করব। এটি হবে যুগান্তকারী একটি পদক্ষেপ।’

সূত্র মতে, শেয়ারবাজারের বর্তমান অবস্থা এবং প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কী কী পরিবর্তন আসবে তা নিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি ধারণাপত্র পাঠিয়েছে। এতে বিএসইসি বলেছে, “আমাদের শেয়ারবাজার এখনো ‘সেকেলে’ রয়ে গেছে। শেয়ারবাজারের প্রতি পদে কাগুজে সিস্টেম; কম্পানি তালিকাভুক্তি থেকে শুরু করে শেয়ার কেনাবেচার প্রক্রিয়া পর্যন্ত। এমনকি ‘মার্কেট রেগুলেটরি বডির’ বাজার মনিটরিংয়েও দুর্বলতা এ জন্য। এখানে অত্যাধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার খুব কম। দেশের শেয়ারবাজারকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটি প্রধান অন্তরায়। এর ফলে তথাকথিত ‘মার্কেট প্লেয়াররা’ সহজেই বাজার নিয়ে খেলতে পারে। ফলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি হারাচ্ছে, আস্থা হারাচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছে। শেয়ারবাজারে অস্বাভাবিক উত্থান-পতন হয়। কারণ ছাড়াই দর বাড়ে অনেক কম্পানির। এসব কিছুর সমাধান হতে পারে ‘ডিজিটালাইজেশন’। আর সে জন্যই এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে।”

বর্তমানে কোনো কম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চাইলে কাগজপত্র নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। আর এ কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তালিকাভুক্তিতে দু-তিন বছর সময় লাগে। এতে কম্পানির আর্থিক অবস্থা পরিবর্তন হয়ে যায়। চূড়ান্ত তালিকাভুক্তির সময় এতে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। কাগজ নিয়ে দৌড়ঝাঁপের জন্য ভালো ভালো কম্পানি তালিকাভুক্তিতে নিরুৎসাহ হয়। ভবিষ্যতে ঝামেলা এড়াতে প্রথমবারের মতো কম্পানি তালিকাভুক্তিতে ‘ফিনটেক মেথড’ ব্যবহার করা হবে। শুধু তালিকাভুক্তিতে নয়, বিনিয়োগকারীরা যাতে ঘরে বসেই সব করতে পারেন, সে জন্যও এই মেথড ব্যবহার করা হবে। তালিকাভুক্তিতে আগ্রহী কম্পানিগুলো ঘরে বসেই শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির সব কার্যক্রম শেষ করতে পারবে। ‘ফিনটেক মেথড’ বহুল জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি, যে পদ্ধতিতে কেউ ঘরে বসেই আর্থিক লেনদেনের কাজ করতে পারে। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং এর একটি বড় উদাহরণ।

বিনিয়োগকারীদের জন্য সম্পূর্ণ নতুন একটি অনলাইন ট্রেডিং সিস্টেম চালু করা হবে, যেখানে বিনিয়োগকারীরা নিজেরাই লেনদেন করতে পারবেন ঘরে বসে। ব্রোকারেজ হাউসে আসার আর প্রয়োজন হবে না। লাগবে না কারো সাহায্য। শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্ট সবার জন্য আসবে নতুন পেমেন্ট সিস্টেম। ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমে ডিএসই, সিএসই থেকে শুরু করে ব্রোকারেজ হাউস—সব প্রতিষ্ঠান যুক্ত থাকবে। এতে খরচ হবে অনেক কম। সব কিছু হবে ডিজিটাল ডকুমেন্টিংয়ে। শেয়ারবাজারের সব স্টেকহোল্ডারকে ‘ডিজিটাল ইকো সিস্টেমে’ আনা হবে। এগুলোর সার্বিক তদারকি করবে সরকার।

১৯৯৬ ও ২০১০ সালে দেশের বিনিয়োগকারীরা স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ধস দেখেছেন। কোটি বিনিয়োগকারী পথে বসেছেন, লাভ হয়েছে কারসাজিচক্রের। এখনো এসব কারসাজিচক্র সক্রিয়। এরা যাতে ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারীদের টাকা লুটে নিতে না পারে, সে জন্য পুরো সিকিউরিটি সিস্টেম ঢেলে সাজানো হবে। এ জন্য বিএসইসির তত্ত্বাবধানে একটি ডাটা ইন্টারঅপারেবিলিটি (ফিনটেক) বোর্ড গঠন করা হবে। এই বোর্ড উন্নত প্রযুক্তির প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করবে। বোর্ডটি শেয়ারবাজারের সব ধরনের তথ্য সংরক্ষণ করবে। বর্তমানে বাজার তদারকিতে সুইডেনের সবচেয়ে অত্যাধুনিক সার্ভেইল্যান্সের সফটওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে বোর্ডটি কারসাজিচক্র ধরতে আরো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। প্রতিটি ব্রোকারেজ হাউসে কেওয়াইসি সিস্টেম (নিজের কাস্টমারকে জানো) চালু হবে। শেয়ার ইস্যুয়ারদের জন্যও আনা হবে ‘ইলেকট্রনিক ফরম্যাটস অব কমিউনিকেশন’।

করোনাকালে ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল। তবে বাংলাদেশের মতো এত দীর্ঘদিন কোনো দেশই তাদের শেয়ারবাজার বন্ধ রাখেনি। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সে জন্য ডিএসই, সিএসইসি, পার্টনার ব্যাংক, সিসিবিএল, সিডিবিএল এবং সংশ্লিষ্ট অন্যদের একই প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা হবে। আন্তঃসংযোগের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করা হবে। এতে কম খরচে, কম সময়ে সবচেয়ে বেশি কাজ করা যাবে। বিএসইসির তত্ত্বাবধানে নিমেষেই গভর্নিং বডিগুলো তথ্যের আদান-প্রদান করতে পারবে।

প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ডাটা ইন্টারঅপারেবিলিটি (ফিনটেক) বোর্ডের জন্য ব্যয় করা হবে ৩১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার; বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ২৭ কোটি দুই লাখ ১৫ হাজার ৪০০ টাকা। বোর্ডটি গঠনপ্রক্রিয়া শেষ করতে সময় ধরা হয়েছে দুই বছর। আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পেছনে দুই বছরে ব্যয় করা হবে ১৫ লাখ ডলার বা ১২ কোটি ৭২ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

প্রসঙ্গত, এরই মধ্যে প্রকল্পের জন্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছে বিএসইসি। এ ছাড়া ‘সাবসিডাইজিং দ্য ইন্ট্রোডাকশন অব এন্ড টু এন্ড অনলাইন ট্রেডিং ফর ব্রোকার্স’ শীর্ষক খাতে চার বছরে ব্যয় করা হবে ২০ লাখ ডলার বা ১৬ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

বাংলার বিবেক ডট কম – ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 BanglarBibek
Customized BY NewsTheme