আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর টেলিভিশনে সাফাই দিলেন মায়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং লাইং। তিনি বলেছেন, আটক নেত্রী আউং সাং সু চি নভেম্বর মাসে যে নির্বাচনে ব্যাপক ভোটে বিজয়ী হয়েছেন বলা হচ্ছে তা নিরপেক্ষ ছিল না। বিবিসি জানাচ্ছে এই খবর।
সেনা সরকার জানায় মায়ানমারের পররাষ্ট্রনীতিতে কোনও পরিবর্তন আসবে না। এদিকে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে চলছে গণবিক্ষোভ। নেত্রী সু চি গৃহবন্দি। তাঁর মুক্তির দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার বিক্ষোভ চলছে মায়ানমারে।
সামরিক সরকারের প্রধান জেনারেল মিং অন লাইং জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবার ব্যাপারে যে চুক্তি আছে তাতেও কোন প্রভাব পড়বে না। যদিও ভাষণে তিনি ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উল্লেখ করেননি। তিনি বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী যেভাবে গৃহহীন লোকজনকে বাংলাদেশ থেকে ফেরত নেবার কথা ছিল সেটা চলতে থাকবে।
গত সপ্তাহ থেকে ফের সেনা শাসনের অধীনে চলে গিয়েছে মায়ানমার। নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে সেনা। নেত্রী সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট সহ সরকারের সব মন্ত্রীরা বন্দি।
সেনা অভ্যুত্থান ছিল রক্তপাতহীন। তবে অভ্যুত্থানের পর থেকে মায়ানমারে চলছে গণবিক্ষোভ। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে বর্মী জনগণ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
মায়ানমারের সেনা শাসন: মায়ানমারে ১৯৬২ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সামরিক সরকার শাসন চলেছিল। রক্তাক্ত সেনা শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ে নেমে ১৯৮৯ থেকে ২০১০ পর্যন্ত গৃহবন্দি ছিলেন সু চি। ২০১৫ সালে অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে সু চি ক্ষমতায় আসেন। ২০২০ সালের নভেম্বরে জাতীয় নির্বাচনে তাঁর দল বিপুল জয় পায়। এর পরেই দেশের ক্ষমতা জবর দখল করে সেনা।
মায়ানমারে নির্বাচিত সরকারের সর্বমময় নেত্রী থাকার সময় সু চি নীরব ছিলেন রোহিঙ্গা নির্যাতন বিষয়ে। সেনার ভূমিকাকে সমর্থন করেছিলেন। এই কারণে, আন্তর্জাতিক মহলে ধীকৃত হন নোবেল জয়ী নেত্রী। মনে করা হচ্ছিল তিনি বর্মী সেনার হাতের পুতুল হয়েছেন। অবশেষে গত সোমবার থেকে তিনি গৃহবন্দি। ক্ষমতা দখল করেছে সেনাবাহিনী।
বাংলার বিবেক ডট কম – ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
Leave a Reply