আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক তুষারধসের জেরে বদলে গিয়েছিল দেশের মানচিত্র। এ দুর্ঘটনায় কত লোক মারা গিয়েছিল, তা এখনও নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। তবে অনুমান করা হয়, ২০০০ থেকে ৭০০০ লোকের মৃত্যু হয়েছিল ওই দুর্ঘটনায়।
এরপরেই বিজ্ঞানীদের নজর যায় হিমবাহগুলির দিকে। বিজ্ঞানীরা হিমবাহ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক পেরুতে ঘটে যাওয়া বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর তুষারধসের সম্পর্কে। যা সারা বিশ্বে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছিল।
১৯৪১ সালের ১৩ ই ডিসেম্বর কর্ডিলেরা ব্লাঙ্কা পর্বতের নীচ থেকে একটি বড় হিমবাহ ধসে পালকাকোচা হ্রদের জলে পড়ে। এরদলে হ্রদে যে বাণ আসে তার জেরে সেই হ্রদের বরফের পাঁচিল ভেঙে যায়। যার ফলে দেখা যায় বন্যা। এই বন্যার জেরে হুয়ারাজ শহরে ২০০০ থেকে ৭০০০ মানুষের মৃত্যু হয়। নীচে যে ছবিটি রয়েছে সেটি আসলে ওই হ্রদেরই ছবি। তবে সেটি ওই দূর্ঘটনার ২ বছর আগের ছবি।
কর্ডিলেরা ব্লাঙ্কা পর্বত ১৪ হাজার ৯৮০ ফুট উঁচু। এখানে অনেকগুলি হ্রদ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হল পালকাকোচা লেক। শুধু যে হিমবাহ ধসে পড়েছিল তা না বড় বড় বরফের চাইও ছিটকে ছিটকে পড়ছিল হ্রদে। ফলে ভেঙে যায় বরফের প্রাচীর। আসে ভয়ঙ্কর বন্যা।
মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই ঘটে যায় বিপর্যয়। ফলে সাধারণ মানুষ পালাতেও সময় পায়নি। মূহূর্তে বন্যার জেরে হুয়ারাজ শহরে হাজার মানুষ মারা যায়। ঠিক কত মানুষ মারা গিয়েছিল তা এখনও জানা যায়নি। কেউ বলেন, এই দুর্যোগে ২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, আবার কেউ বলেন ৭ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
হিমবাহের ধস নামার আগে ওই হ্রদে প্রায় ১০ মিলিয়ন ঘনমিটার জল ছিল। হিমবাহ ভেঙে যাওয়ার পরে সেখানে জল ছিল মাত্র ৫ মিলিয়ন ঘনমিটার। অর্থাৎ অর্ধেক হ্রদ খালি হয়ে যায়। এই হ্রদ থেকে বের হওয়া জল, কাদা ও পাথর দেশের নকশাই বদলে দিয়েছিল। যেখানে নদী ছিল সেখানে কাদা জমা হয়ে যায়। এমনকি শহরটি আজও জলে ডুবে আছে। হুয়ারাজ শহরে হ্রদ থেকে প্রচুর কাদা, জল উঠে এসে শহর প্লাবিত করে। বড় আইসবার্গগুলিও পাহাড় থেকে প্রবাহিত হয়ে নীচু অঞ্চলে ছড়িয়ে যায়।
বাংলার বিবেক ডট কম – ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
Leave a Reply