ধর্ম ডেস্ক : সুরমা হলো এক ধরনের প্রাকৃতিক কাজল, যা চোখে ব্যবহার করা হয়। এটি সাধারণত চোখের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য এবং চোখের সুস্থতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। সুরমা চোখে জ্বালাপোড়া নিরাময় করে। পাশাপাশি চোখে প্রবেশকৃত ধুলা ও ক্ষতিকর পদার্থগুলো নিঃসরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
সর্বোৎকৃষ্ট সুরমা। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, তিনি বলেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের জন্য ইছমিদ সুরমা সর্বোৎকৃষ্ট। কারণ, তা দৃষ্টি বাড়ায় এবং এর ফলে অধিক ভ্রু জন্মায়।’ (শামায়েলে তিরমিজি: ৪৩)
প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে প্রতি চোখে তিনবার করে সুরমা লাগানোর কথা হাদিসে এসেছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, তিনি বলেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা ইসমিদ সুরমা ব্যবহার করো। কারণ তা দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে ও চোখ পরিষ্কার রাখে এবং অধিক ভ্রু উৎপন্ন করে।’
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) আরও বলেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে একটি সুরমাদানি ছিল। প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে ডান চোখে তিনবার এবং বাম চোখে তিনবার সুরমা লাগাতেন। (সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকি: ৮৫১৬)
সুরমা ব্যবহার করা সুন্নত হিসেবে গণ্য করা হয়। হাদিসে উল্লেখ আছে যে মহানবী মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুরমা ব্যবহার করতেন, বিশেষ করে ইসমিদ নামক এক ধরনের সুরমা। তিনি এটিকে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির জন্য এবং চোখের সুস্থতার জন্য উপকারী মনে করতেন। হাদিসে বলা হয়েছে
নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতে ঘুমানোর আগে তিনবার ডান চোখে এবং তিনবার বাম চোখে সুরমা ব্যবহার করতেন। (তিরমিজি, হাদিস নং ১৭৫৭)
সুতরাং, সুরমা ব্যবহার করা সুন্নত, এবং এটি চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হওয়ার পাশাপাশি ইসলামিক ঐতিহ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল হিসেবে বিবেচিত।
সুরমা ব্যবহারের নিয়ম
১. প্রত্যেক চোখে আলাদাভাবে তিনবার করে সুরমা লাগানো। প্রথমে ডান চোখে তিনবার। এরপর বাম চোখে তিনবার। ২. নবীজি কখনও ডান চোখে তিনবার এবং বাম চোখে দুবার লাগাতেন। তাই চাইলে এ পদ্ধতিতেও সুরমা লাগানো যায়। তবে পুরুষের জন্য শুধু সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে সুরমা ব্যবহার করা ঠিক নয়। কারণ, এ ধরনের অঙ্গসৌন্দর্য নারীদের বিশেষত্ব। পুরুষরা শুধু উপকার লাভের নিয়তে সুরমা ব্যবহার করতে পারবেন। (ফাতাওয়া শামি: ২/৪১৭)
সুরমা হলো এক ধরনের প্রাকৃতিক কাজল, যা চোখে ব্যবহার করা হয়। এটি সাধারণত চোখের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য এবং চোখের সুস্থতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। সুরমা ব্যবহারের কয়েকটি উপকারিতা হলো-
চোখকে পরিষ্কার রাখা: সুরমা চোখের ভিতরের ময়লা এবং ধুলো বের করতে সহায়ক। সুরমা চোখকে ঠান্ডা রাখে এবং চোখের শীতলতা বজায় রাখে। প্রাচীনকাল থেকে সুরমা ব্যবহারের কারণে দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর উপকারিতা বিশ্বাস করা হয়। কিছু সুরমা বিশেষ করে প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি হলে চোখের সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। সুরমা ব্যবহার ইসলামিক ঐতিহ্যেও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়, এবং হাদিসে নবীজি (সা.) নিজেও সুরমা ব্যবহার করার কথা উল্লেখ করেছেন।
Leave a Reply