অনলাইন ডেস্ক : ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয় আওয়ামী মহিলা লীগের তৎকালীন সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৩ জনকে। হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের করা এই হামলায় আহত হন অসংখ্য নেতাকর্মী। আওয়ামী লীগের অভিযোগ এই ঘটনায় পরেরদিন মতিঝিল থানায় মামলা করতে গেলেও তাদের মামলা নেয়নি পুলিশ। পরে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। নোয়াখালীর সেনবাগের নিরীহ যুবক জজ মিয়াকে এই হামলার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করে পুলিশ।
চারদলীয় জোট সরকারের পরিবর্তন হলে সামনে আসে জজ মিয়া নাটক। তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে করা হয় মামলার-সাক্ষী। এদিকে আদালতের নির্দেশে অধিকতর তদন্তে বের হয়ে আসে পেছনের কারিগরদের নাম। তারেক রহমানসহ আসামি করা হয় জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, শিক্ষাউপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, সমাজকল্যাণমন্ত্রী জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে। এছাড়া আসামি করা হয় তৎকালীন পুলিশ প্রধান এনএসআইসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের। তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে আসে হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানের দেয়া জবানবন্দিতে।
পুরো ঘটনার ছক কষা হয় মুফতি হান্নানের বাড্ডার ভাড়া বাসায়। এছাড়া তার দেয়া জবানবন্দি অনুযায়ী তারা হাওয়া ভবন এবং আবদুস সালাম পিন্টুর বাসভবনে দফায় দফায় বৈঠক করেন। হামলার জন্য পাকিস্তানে তৈরি আর্জেস গ্রেনেড সরবরাহ করেন মাওলানা তাজুল ইসলাম ওরফে তাজ। আর এ কাজে তিনি সহায়তা নেন পাকিস্তানি নাগরিক মাজেদ ভাটের। ঘটনার পর পাকিস্তান হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় পালিয়ে যান তাজুল ইসলাম।
দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয় বিচারিক আদালত থেকে। রায়ে মুফতি হান্নানসহ ১৯জনকে মৃতুদণ্ড এবং তারেক রহমানসহ আরো ১৯জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই জঙ্গি নেতা তাজুল ইসলামসহ ১৮ জন পলাতক রয়েছেন।
মামলাটি বর্তমানে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য রয়েছে এবং গ্রেফতার থাকা আসামিরা খালাস চেয়ে আপিল আবেদন করেছেন।
বাংলার বিবেক /এম এস
Leave a Reply