রাজশাহী : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলা সিনিয়র স্টাফ নার্সের বদলির আদেশ বাতিল করা হয়েছে।
গত শুক্রবার রাত ১২টার দিকে ওই নার্স অনলাইনে তার বদলির আদেশ বাতিলের একটি চিঠি পেয়েছেন। এই নার্সের বাড়ি রাজশাহী নগরীতেই।
এই চিঠিতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার ও পরিচালক (প্রশাসন ও শিক্ষা) মোহাম্মদ আব্দুল হাইয়ের স্বাক্ষর রয়েছে।
এ দুই কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে গত বৃহস্পতিবার ওই নার্সকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি করা হয়েছিল। ২৪ মার্চ তাকে সেখানে যোগ দিতে বলা হয়।
প্রায় ১০ মাস আগে সরকারি চাকরিতে ঢোকা এই নার্স রামেক হাসপাতালে কোর্স করতে আসা এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছিলেন। বদলির আদেশ পাওয়ার পর গত শুক্রবার সকালে ওই নার্স সাংবাদিকদের বলেন, ‘সত্য কথা বলায় আমাকে শাস্তি দিতে বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে। আমার বিচার চাওয়াটা কি অপরাধ? এরপর থেকে রামেক হাসপাতালের আর কোন নার্স যৌন হয়রানির শিকার হলেও মুখ খুলবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গত শুক্রবার দুপুরে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল হাই সাংবাদিকদের বলেন, ‘চিকিৎসক ও নার্সদের মধ্যে দ্বন্দ দেখা দিলে চিকিৎসা সেবায় প্রভাব পড়বে। হাসপাতালে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রেখে রোগীদের সেবা নিশ্চিত করার স্বার্থে নার্সকে বদলি করা হয়েছে। রাজশাহী থেকে চট্টগ্রাম বদলি একটু বেশি দূরে হয়ে গেছে। সেটা বাতিল করে তাকে রাজশাহীরই অন্য কোন স্থানে রাখা হবে।
তবে বদলির আদেশ বাতিলে ওই নার্সকে অন্য কোন হাসপাতালে দেয়া হয়নি।
গতকাল শনিবার দুপুরে যোগাযোগ করা হলে ওই নার্স জানান, তিনি এখন রামেক হাসপাতালেই ডিউটি করছেন। মধ্যরাতে তিনি তার বদলির আদেশ বাতিলের চিঠি পেয়েছেন। এই আদেশ বাতিলে তিনি খুশি।
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগী ওই নার্সকে গত ১৮ জানুয়ারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) দায়িত্ব দেয়া হয়। আর সেদিনই সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক মামুন-অর-রহমান তাকে যৌন হয়রানি করেন। পরদিন একই কা- ঘটান ওই চিকিৎসক। এ ঘটনা জানাজানি হলে ২০ জানুয়ারি ডা. মামুনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে। ১০ ফেব্রুয়ারি হাসপাতাল পরিচালকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়েছে।
অভিযুক্ত চিকিৎসক মামুন রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস শেষ করেছেন। তিনি সরকারি হাসপাতালে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক নন। তিনি চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত। ছুটি নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যানেসথেসিয়া ডিপ্লোমা করছেন। সেখান থেকেই কোর্স সম্পন্ন করতে এসেছিলেন রামেক হাসপাতালে। অভিযোগ ওঠার পর তার কোর্স বাতিল করে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
বাংলার বিবেক /এম এস
Leave a Reply