অনলাইন ডেস্ক: বাচ্চারা ছোটবেলায় মিষ্টি, চকোলেট, আইসক্রিম বা এই ধরনের অনেক মিষ্টিজাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করে। ছোট বলেও বাড়ির অন্য কেউ এ বিষয়ে কোন বিধিনিষেধ দেয় না। এতদিন চিকিৎসকরা এই নিয়ে খুব বেশি নিষেধ না দিলেও এখন বলছেন ছোট বেলায় অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া শারীরিক সমস্যা ডেকে আনতে পারে।
আমরা সকলেই জানি, নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি মিষ্টি খেলে তা ডায়াবেটিস, ওবেসিটির মতো শারীরিক সমস্যা ডেকে আনতে পারে, হতে পারে দাঁতের সমস্যাও। কিন্তু নতুন এই সমীক্ষা বলছে, এসবের পাশাপাশি মিষ্টি পানীয় স্মৃতিশক্তিতেও প্রভাব ফলতে পারে। যা শুরুতে বোঝা না গেলে বয়স বাড়লে সামনে আসতে পারে।
ট্রান্সলেশনাল সাইকিয়াট্রিতে প্রকাশিত সমীক্ষাটি বলছে, গাট মাইক্রোবায়োম, বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া বা অন্যান্য মাইক্রোঅরগ্যানিজম যে ভাবে স্টমাকে ও ইন্টেসটাইনে বাড়ে, তা পরে ব্রেনের একটা নির্দিষ্ট অংশে প্রভাব ফেলে। সেন্টারস ফর ডিজিস কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশনের মতে, মিষ্টি জাতীয় পানীয় আমেরিকান ডায়েটে অ্যাডেড সুগারের অন্যতম উৎস। এই দেশের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ প্রতিদিন এই সুগার ডায়েটের উপরে নির্ভরশীল।
ইউএসসি ডারনসাইফ কলেজ অফ লেটারস, আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক ও নিওরো গবেষক স্কট কানোস্কি বলেন, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ডায়েট ও ব্রেন ফাংশনের মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে। আর এটা নতুন নয়। বেশ কয়েক বছর ধরেই দেখা গিয়েছে এই বিষয়টি। ইঁদুরের উপরে গবেষণা করে দেখেছেন, মিষ্টিজাতীয় খাবার তাদের ব্রেনে প্রভাব ফেলে। তাদেরও গাট মাইক্রোবায়োমে পরিবর্তন আসে।
নতুন এই সমীক্ষায় কানোস্কি ও জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, মেমোরি ফাংশন বা স্মৃতিশক্তির সঙ্গে মিষ্টি পানীয়র খাবারের সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে। তারা পরীক্ষার জন্য প্রাপ্তবয়স্ক ইদুরদের মিষ্টি জাতীয় খাবার দেন, যে ধরনের খাবার মানুষ পানীয় হিসেবে পান করে। এভাবে এক মাস পরীক্ষা করার পর দু’ভাবে তাদের স্মৃতিশক্তি পরীক্ষা করা হয়। একটিতে দেখা হয়, হিপোক্যামপাসের পরিস্থিতি অর্থাৎ কোন অংশে ব্রেনের প্রভাব পড়েছে ও অন্যটিতে দেখা হয়, ওই অংশ স্মৃতিশক্তিকে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে, যাকে পেরিফেরাল কনটেক্সট বলা হয়। পরীক্ষার পর বোঝা যায়, যে ইঁদুররা সাধারণ পানি পান করেছিল এক মাস, তাদের থেকে যারা মিষ্টি পানীয় পান করেছে, তাদের স্মৃতিশক্তি কমেছে।
অর্থাৎ কম বয়সে বেশি মিষ্টি খেলে তা স্মৃতিশক্তিতে প্রভাব ফেলে। এ থেকে কানোস্কি বলেন, বাচ্চা বয়সেই ডায়েট নিয়ে চিন্তা-ভাবনা বা অভ্যেসে পরিবর্তন, ব্যায়াম, যোগ অভ্যাস এই সব সমস্যা থেকে দূরে রাখতে পারে।
সূত্র: নিউজ১৮
বাংলার বিবেক /এম এস
Leave a Reply