অনলাইন ডেস্কঃ দুর্যোগে ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনতে সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এবং সহকারী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা নিয়োগ প্রদানের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম এ লতিফ অডিটোরিয়ামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবেলায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন, কারণ নদীর নাব্যতা, অবকাঠামোগত প্রতিবন্ধকতা এবং জলবায়ুর পরিবর্তন দুর্যোগের তীব্রতা বাড়াচ্ছে।’
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাবেক ডিজি ড. ওয়াজেদ বলেন, ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অপরিকল্পিত নগরায়ন, শিল্প বিকাশ এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা বাড়ছে।
ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুযায়ী, দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশের জিডিপি প্রতি বছর প্রায় ১.৮ শতাংশ হারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড হেলথ প্রমোশন ইউনিটের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ড. ইকবাল কবির বলেন, ‘দুর্যোগের সময় নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। নারীরা প্রায়ই ত্রাণ ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়, বিশেষ করে গর্ভবতী নারীরা চিকিৎসা ও নিরাপদ পানির অভাবে ভুগে থাকেন। শিশুরা পুষ্টি ও শিক্ষার ঘাটতিতে পড়ে এবং সহিংসতা ও শোষণের ঝুঁকি বাড়ে।
ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী এবং পরিবেশ বিষয়ক অর্গানাইজেশন-ইয়থ লিড ক্লাইমেট চেইঞ্জ (ওয়াইএলসিসিএফ) এর প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল ইসলাম সোহাগ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচিগুলো হতে হবে অভিযোজনমূলক, যাতে জান-মালের ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়। আমরা দুর্যোগ মোকাবেলায় তাৎক্ষণিকভাবে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করি, সেটা ব্যক্তিগত পর্যায়। এরপর সামাজিক ও জাতীয় পর্যায়ে কাজ হয়। যেকোনো দুর্যোগে দেখা যায় ব্যক্তিগত পর্যায়ে মানুষ এগিয়ে আসছে।
কিন্তু সরকারিভাবে যথেষ্ট ক্ষেত্র না থাকায় কাজের পরিধি সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রত্যেক উপজেলাভিত্তিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয় তা সামাজিক পর্যায়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অভাব রয়েছে দক্ষ জনশক্তির এবং আধুনিক প্রযুক্তির। মাঠপর্যায়ে পর্যাপ্ত পর্যবেক্ষণের অভাবে দুর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতির অভাব থাকছে এবং দুর্যোগ পরবর্তী কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাইফুল আলম বলেন, ‘২০১০ সালে ন্যাশনাল প্লান ফর ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্রণয়ন করা হয়, যার অন্যতম লক্ষ্য ছিল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় পেশাদারিত্ব অর্জন।
এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২ এর উদ্দেশ্য পূরণে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ। কিন্তু আজ পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে কোনো পদ সৃষ্টি করা হয়নি।
Leave a Reply