1. admin@zzna.ru : admin@zzna.ru :
  2. md.masudrana2008@gmail.com : admi2017 :
  3. info.motaharulhasan@gmail.com : motaharul :
  4. email@email.em : wpadminne :

ভর্তি পরীক্ষা এলেই সমালোচিত হয় রাজশাহী নগরবাসী, কেন?

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০২২
  • ১২১ বার
ভর্তি পরীক্ষা এলেই সমালোচিত হয় রাজশাহী নগরবাসী, কেন?
ভর্তি পরীক্ষা এলেই সমালোচিত হয় রাজশাহী নগরবাসী, কেন?

অনলাইন ডেস্ক: ভর্তি পরীক্ষা এলেই নানা কারণে সমালোচিত হয় রাজশাহী নগরবাসী। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের থাকার অতিরিক্ত টাকা, খাবারের দাম ও যাতায়াত ভাড়া বৃদ্ধির মতো বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সমালোচনার মুখে পড়ে নগরীর লোকজন। এবছরও ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মেসে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন নগরীর মেস মালিকরা। অথচ এ অঞ্চলের মেস মালিকদের আয়ের অন্যতম উৎস বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ আবাসিক ব্যবস্থা না থাকায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী বাহিরে মেস কিংবা বাসায় ভাড়া থাকেন। যাকে কেন্দ্র করে বাসা মালিকদের এটা ব্যবসায়িক আয়ের উৎসে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ব্যবস্থা ও খাবারের হোটেল, রেস্টুরেন্টে ও দোকানপাট এ অঞ্চলের লোকজনের অন্যতম আয়ের উৎস। ভর্তি পরীক্ষা এলে এসব জায়গাতে দ্রব্যমূল্যসহ আনুষ্ঠানিক জিনিসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েন এলাকার লোকজন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে বিনোদপুর, কাজলা, তালাইমারী, মেহেরচন্ডি, বুধপাড়া এলাকাসহ নগরীর বিভিন্ন জায়গায় হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভাড়া থাকেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ফলে নগরীর এসব ছাত্রাবাসে প্রায় পঞ্চম হাজার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী অবস্থানের সুযোগ রয়েছে। তবে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কথা চিন্তা করে নতুন সিদ্ধান্ত নেয় নগরীর মেস মালিক কর্তৃপক্ষ। তাদের সিদ্ধান্ত অনুসারে, মেসে একজন ভর্তি পরীক্ষার্থীর বেশি থাকলে মেসভেদে জনপ্রতি ২০০-৫০০ টাকা অতিরিক্ত মালিক পক্ষকে দিতে হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সিদ্ধান্তকে হটকারী, অন্যায় ও নিচু মানসিকতা অ্যাখ্যা দিয়ে মেস মালিকদের ছাত্রবান্ধব হওয়ার আহ্বান জানান তারা। ফলে ওইদিনই সিদ্ধান্ত কিছুটা শিথিল করে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মেসে একাধিক শিক্ষার্থী থাকলে কর্তৃপক্ষকে তা অবিহিত করতে হবে এবং মেসে কোনো অভিভাবক থাকতে চাইলে বিনিময়ে মেস মালিককে ২০০-৫০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে।

মেস মালিকদের এমন সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিলন হোসাইন বলেছেন, যে অঞ্চলের মানুষের অতিথিদের ২/১ দিন ফ্রি রাখার মতো মন-মানসিকতা নেই, সেই অঞ্চলে বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার কোনো মানেই হয় না। যাদের টাকার উপর এই অঞ্চলের মানুষের ২ বেলা খাবার নির্ভর করে, সেই ছাত্র-ছাত্রীদের সাথেই তারা খারাপ ব্যবহার করে। এদের সমন্ধে কিছু বলার নেই!

মুশফিক আল আজাদ বলেছেন, একটা জায়গায় সারাবছর ভাড়া দিয়ে থেকে বছরে একদিন যদি কোনো অতিথি রাখা না যায়, তাহলে বিষয়টা দুঃখজনক!

এবিষয়ে মেস মালিক কর্তৃপক্ষ বলছে, আমরা কোনো শিক্ষার্থীর থেকে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছি না। শুধু অভিভাবক থাকলে সেক্ষেত্রে মেসভেদে অতিরিক্ত কিছু টাকা দিতে হবে। কারণ একটা মেসে নির্ধারিত সীমার বেশি মানুষ থাকলে অবশ্যই বেশি পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস ব্যবহার হবে। বাসায় বাড়তি চাপ পড়বে। নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে। তা ছাড়া এ অঞ্চলে তেমন কোনো আয়ের উৎস নেই, তাই মেস ব্যবসাই মালিকদের আয়ের একটি উৎস বলে উল্লেখ করছেন মালিকপক্ষ।

তবে এমন সমস্যা নতুন নয়। প্রতিবছর ভর্তি পরীক্ষা সময় মেস ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম যেমন বেড়ে যায়, তেমনি যানবাহন ও খবার ব্যবসায়ীদের লেলিহান লালসার শিকার হন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। রাস্তায় যাতায়াতে পাঁচ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা এবং ১০/২০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা কিংবা তার অধিক পর্যন্ত নেওয়ার অভিযোগ অনেক পুরনো। এমনকি খাবারের দোকানদারদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের হোটেলে নিম্নমানের খাবারের চড়া দাম ও বছর বছর বাসা ভাড়া বৃদ্ধিসহ প্রতিনিয়ত নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে আসছেন ভাড়াটে শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন এক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফাহাদ। তিনি বলেন, গত বছর পরীক্ষা দিতে এসে এমন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম। ৫/১০ টাকা দুরত্বের রিকশা ভাড়া ১৫০/২০০ টাকা চায়। বাধ্য হয়ে কিছুটা কমিয়ে ১০০ টাকায় আসতে হয়েছে। এক-দুই দিনের জন্য নতুন জায়গায় এসে এমন ঘটনা প্রত্যাশিত নয়। আবার ভর্তি হয়ে যে মেসে ভাড়া থাকি, সেখানেও গত কয়েক মাস থেকে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

তবে অনেকে বলছেন, এ অঞ্চলের সব মানুষই যে এমন, আসলে তা নয়। কিছু কিছু মেস মালিক, যানবাহন চালক এবং খাবার দোকানদার আছেন, যারা শিক্ষার্থীদের অতিথি হিসেবে আপ্যায়ন করেন। এমনকি শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যেও থাকা-খাওয়াসহ নানাবিধ সহযোগিতার নজির রয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপরীক্ষাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত সিটি কর্পোরেশনের প্রস্তুতিমূলক সভায় নগরীর মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন মেস মালিকপক্ষকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা মেসে অবস্থানকালে তাদের থেকে অতিরিক্ত টাকা না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এমনকি ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিকট যেন অন্যায়ভাবে অতিরিক্ত ভাড়া ও খাবার থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় না করা হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেছেন তিনি।
নগরীতে আগত সবাই যেন ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরতে পারেন, সেই প্রত্যাশা করেছেন মেয়র।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, প্রতিবছর ভর্তি পরীক্ষাগুলো পাড়ি দেওয়া বিশাল কর্মযজ্ঞ। পরীক্ষা দিতে আসা লাখো শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের নিরাপত্তা, ক্যাম্পাসের শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু পরীক্ষা পরিচালনা করা খুবই কষ্ট সাধ্য ব্যাপার৷ তা-ছাড়া বছর বছর মেস ভাড়ার বিষয়টি নিয়ে জটিলতা অতিরিক্ত চাপ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিবারই টাকা বিষয়টি বিবেচনার জন্য অনুরোধ করা হয়। আমরা চাই সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হোক। তবে মাথায় রাখা দরকার, মেস মালিকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কেউ নয়, তাই করে তেমন কিছু করার সুযোগ সীমিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠুভাবে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করা প্রশাসনের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। তবে ইতোমধ্যে পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ভর্তি পরীক্ষায় সার্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি ভর্তিচ্ছু থেকে অতিরিক্ত ভাড়া কিংবা দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ানো কেন্দ্রিক যে সমস্যা সৃষ্টি হয়, তা সমাধানে আশ্বস্ত করেছেন। আশা করি, সব সমস্যা ছাপিয়ে সুষ্ঠুভাবে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।

বাংলার বিবেক/এমআরটি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 BanglarBibek
Customized BY NewsTheme