শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় তিন বছর আগে লিজা আক্তার (১১) নামে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে শরীয়তপুর নারী ও শিশুনির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুস সালাম খান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার সরদারকান্দি গ্রামের মৃত সামেদ শেখের ছেলে মো. ফরিদ শেখ (৪০) ও একই এলাকার আবদুর রাজ্জাক শেখের ছেলে মো. জাকির শেখ (৩২)।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাভোকেট ফিরোজ আহম্মেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই শরীয়তপুরে ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরের সরদারকান্দি গ্রামের মো. লেহাজউদ্দিন শেখের মেয়ে লিজাসখিপুর থানার ১নং সখিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
লিজা আক্তারকে ডেকে নিয়ে একই গ্রামের আলাউদ্দিন শেখের টিনের ঘরে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এর পর লিজা আক্তার ধর্ষণের কথা পরিবারকে জানিয়ে দেবে বললে আসামিরা তাকে শ্বাসরোধে করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় ১৬ জুলাই নিহত স্কুলছাত্রীর কাকি নাসরিন আক্তার সখিপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ২২ জুলাই সখিপুরের ছৌয়ালকান্দি গ্রামের বুলবুল সরদারের পাটক্ষেত থেকে অর্ধগলিত লিজার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৩ জুলাই নিহতের বাবা মো. লেহাজউদ্দিন শেখ বাদী হয়ে দুজনকে আসামি করে সখিপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পরে পুলিশ ওই আসামিদের গ্রেফতার করে। আসামিরা পুলিশ ও কোর্টে স্কুলছাত্রী লিজাকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। আট সাক্ষীর সাক্ষগ্রহণ শেষে বুধবার আদালত এ রায় ঘোষণা করলেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি ফিরোজ আহমেদ জানান, সখিপুরের লেহাজউদ্দিনের মেয়ে লিজা আক্তারকে ফরিদ শেখ ও জাকির শেখ জোরপূবক ধরে নিয়ে পালাক্রয়ে ধর্ষণ করার পর যখন লিজা প্রকাশ করার কথা বলে আসামিরা তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এ আসামিরা কোর্টে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এ রায়ে আমরা সস্তুষ্ট।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. সাহে আলম বলেন, উদ্ধারকৃত মরদেহটি লিজার কিনা সেটি প্রমাণ হয়নি। পাশাপাশি ধর্ষণ প্রমাণ হয়নি। তার পরও ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছে। আমার দৃষ্টিতে আইন অনুযায়ী বিচার হয়নি। আমরা উচ্চ আদালতে যাব।
বাংলার বিবেক ডট কম – ০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
Leave a Reply