নিজস্ব প্রতিবেদক: আমের জন্য দুনিয়া জোড়া খ্যাতি রয়েছে রাজশাহীর। তবে রাজশাহীর মিষ্টি পানের খ্যাতি রয়েছে দেশের ভেতরে ও বিদেশেও। এবার রাজশাহীর মিষ্টি পান নিয়ে এসেছে সুখবর।
জানা গেছে, রাজশাহীর মিষ্টি পান পেতে যাচ্ছে ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই স্বীকৃতি। জিআই স্বীকৃতি পেলে রাজশাহীর পানের উৎপাদন, বণ্টন ও বিপণনে যোগ হবে নতুনমাত্রা। সামগ্রিকভাবে লাভবান হবেন রাজশাহীর পানচাষিরা।
রাজশাহীতে উৎপাদিত মিষ্টি পানের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, ‘রাজশাহীর মিষ্টি পান’ শিগগিরই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাবে বলে আশা করছি। দুই মাস আগে এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ হলেই আমরা এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারব।
এদিকে পানকে বলা হয় ‘ক্যাশ ক্রপ’ বা অর্থকরী ফসল বলা হয়। আর কৃষকরা পানের বরজকে বলে থাকেন ‘ক্যাশ ব্যাংক’। যখন প্রয়োজন হয় তারা বরজ থেকে পানপাতা তুলে সরাসরি বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, এক বিঘার একটি পানের বরজ থেকে একজন কৃষক মাসে অন্ততঃ ৩৫ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। প্রতি বিঘা জমিতে পানের বরজ তৈরিতে কৃষকের এককালীন খরচ হয় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। যার স্থায়িত্বকাল হয়ে থাকে ৩০ থেকে ৪০ বছর।
রাজশাহী জেলায় পান চাষে জড়িত কৃষকের সংখ্যা ৩৯ হাজার ১০১ জন। গত ৫ বছরে রাজশাহী জেলায় পানের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ। ২০১৮ সালে পানের আবাদ হতো আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে পান উৎপাদন হয়েছে ৭৭ হাজার ২১৯ টন। ৯ উপজেলার মধ্যে বাগমারা, পবা, মোহনপুর ও দুর্গাপুরে পানের আবাদ বেশি হয়। পান বরজের সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৬টি। এসব বরজে উৎপাদিত পান জেলার ২০টি হাটে সরাসরি বিক্রি করে থাকেন কৃষকরা।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, রেশম ও আমের পাশাপাশি পানও যে অর্থনীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, সে কারণে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য দুই মাস আগে আমরা আবেদন করি। জিআই সনদ পেলে আমাদের পান দেশ-বিদেশে আরও সমাদৃত হবে। পান উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটবে, যা অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।
Leave a Reply