স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা হতে অবৈধ নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রির সংঘবদ্ধ চক্রের মূলহোতা মোঃ জাহাঙ্গীর আলমসহ মোট ৫ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৩। এ সময় বিপুল পরিমাণ নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার উদ্ধার।

মঙ্গলবার  (১৩ ফেব্রুয়ারী) বিকাল ৫টায়  রাজধানীর নিউমার্কেট থানাধীন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলো: দেশের বিভিন্ন জেলার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৩০), মোঃ ফয়সাল হোসেন (২৭), মোঃ আশিক শেখ (২০), মোঃ শরিফুল (২৪), মোঃ রাসেল (২৬)।

বুধবার র‌্যাব-৩, এর পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

র‌্যাব জানায়, অবৈধ নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রয়কারী চক্রের কতিপয় সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবৎ রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় বিনা অনুমতিতে বিক্রয় করে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল ও বিটিআরসির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে  মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর নিউমার্কেট থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রয়কারী চক্রের মূলহোতা  মোঃ জাহাঙ্গীর আলম-সহ  তার সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকালে এই চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে হতে ১২ টি নেটওয়ার্ক বুস্টার, ১৬ টি বুস্টার আউটডোর এন্টিনা, ৩ টি রেডিও ট্রান্সমিটার, ১২ টি বুস্টার ইনডোর এন্টিনা, ৩ টি বুস্টার ক্যাবল, ১৮ টি কনভার্টার, ১৫ টি চার্জার, ১০ টি মোবাইল ফোন, ২০ টি সীম কার্ড, ০৩ টি হাত ঘড়ি, ১ টি ড্রাইভিং লাইসেন্স, ২ টি এনআইডি কার্ড, ৪ টি এটিএম কার্ড এবং নগদ ৯,৫৩০/- টাকা উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা জানায় , তারা বিগত পাঁচ বছর যাবৎ অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রয় করে আসছে।গ্রেফতার আসামিরা রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান হতে অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার ক্রয় করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করতো। এছাড়াও তারা হোয়াটস অ্যাপ্ ও ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে উচ্চ মূল্যে বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও  ট্রান্সমিটার এর যন্ত্রাংশ লাইসেন্স ব্যতিত বিক্রি করে থাকে। উক্ত রেডিও ট্রান্সমিটার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার টুজি, থ্রিজি এবং ফোরজি মোবাইল নেটওয়ার্ক এর কার্যক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। এই কারণে বিভিন্ন অপরাধীরা অপরাধ করার উদ্দেশ্যে উচ্চ মূল্যে এইসব অবৈধ ডিভাইস ক্রয় করে দূর্গম এলাকায় থেকে যে কোন অপরাধমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারে। এভাবে অপরাধীরা নির্বিঘ্নে অপরাধ করে নিজেদের আড়াল করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারী এড়ানোর অপচেষ্টা করে থাকে।

গ্রেফতার আসামীরা আরও জানায় , ফোর-জি রাউটার আমদানির নামে এসকল যন্ত্রাংশসমূহ বাংলাদেশের বাজারে নিয়ে আসে। এছাড়াও বিভিন্ন চোরাই পথের মাধ্যমেও তারা এসব যন্ত্রাংশ আমদানি করে থাকে। পরবর্তীতে তারা হোয়াটসঅ্যাপে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে এসকল যন্ত্রাংশসমূহ উচ্চমূল্যে বিভিন্ন অপরাধী চক্রের কাছে বিক্রয় করে থাকে। এই চক্রটি বিগত পাঁচ বছরে অজ¯্র রেডিও ট্রান্সমিটার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রয় করেছে। চক্রটি প্রতি সেট এন্টেনা ২০ হাজার টাকা এবং প্রতি সেট রেডিও ট্রান্সমিটার ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছে বিক্রয় করে আসছে।

বিটিআরসির অনুমোদন ব্যতিত এসকল যন্ত্র এবং যন্ত্রাংশ ক্রয়-বিক্রয় বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ। গ্রেফতার আসামীরা পাঁচ বছর যাবৎ অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার এর ক্যাবলসহ যন্ত্রাংশসমূহ মজুদ, সরবরাহ, ক্রয়-বিক্রয় ও প্রদর্শন করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন করেছে।

গ্রেফতারকৃত জাহাঙ্গীর ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। এরপর সে কিছুদিন একটি মোবাইল কোম্পানীর সেলস্ম্যান হিসেবে চাকুরী করে। ২০১৪ সালে সে ঢাকায় এসে সিসি ক্যামেরা মেরামতের কাছ করে আসছিলো।