1. admin@zzna.ru : admin@zzna.ru :
  2. md.masudrana2008@gmail.com : admi2017 :
  3. info.motaharulhasan@gmail.com : motaharul :
  4. email@email.em : wpadminne :

মুখে হাসি ১১ কোটি মানুষের

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ২৭০ বার

অনলাইন ডেস্ক : দেশের ১১ কোটি মানুষের পকেটে যাচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা। এর স্বচ্ছতা নিশ্চিত হলেই বিশ্বের ‘রোল মডেল’ হবে বাংলাদেশ-এমন মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের। তাদের মতে, এই মুহূর্তে দেশের চলতি অর্থবছরে জিডিপির ৩ দশমিক ০১ শতাংশ ব্যয় হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে, যা উন্নত ও মধ্য আয়ের অনেক দেশের তুলনায় এই হার বেশি।

বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দিতে এ খাতে সরকারের ব্যয় হচ্ছে এক লাখ ১৭ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা। নানা ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে দারিদ্র্য হার নিয়ন্ত্রণ ও এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখছে। শুধু বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে পারলেই বিশ্ব দরবারে এটি অনুকরণীয় হবে। শুধু তাই নয়, যে লক্ষ্যে এ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে, সেটিও অর্জিত হবে।

সূত্র মতে, বিশ্বের মোট জিডিপির ১ দশমিক ৫ শতাংশ ব্যয় হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে। এর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো এ খাতে ব্যয় করছে জিডিপির শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ। এ ছাড়া বিশ্বের অন্য অঞ্চলগুলোর মধ্যে ইউরোপীয় দেশগুলো জিডিপির ২ দশমিক ২ শতাংশ, সাব সাহরা আফ্রিকা ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ, লেটিন আমেরিকা ১ দশমিক ৫ শতাংশ, পূর্ব এশিয়া ১ দশমিক ১ শতাংশ এবং মধ্য এশিয়া জিডিপির ১ শতাংশ ব্যয় করা হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধিকাংশ বাস্তবায়ন হচ্ছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। জানতে চাইলে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, দেশের দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রেও বেশ কাজ করছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বাজেটের বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক ও সদয়। ফলে আগামী বছরেও এ খাতে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে।

বিআইডিএস-এর সাবেক ডিজি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এম কে মুজেরী যুগান্তরকে বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে অনেকে উপকৃত হচ্ছেন। কিন্তু কিছু অপব্যহারও হচ্ছে। যাদের পাওয়া দরকার তাদের অনেকে এই সুবিধা পাচ্ছেন না। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে স্বচ্ছতা ও উপকারভোগী নির্বাচন ঠিক করে বাস্তবায়ন করতে পারলে এটি হতে পারে বিশ্বের ‘রোল মডেল’।

তিনি আরও বলেন, এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো এ খাত আরও সম্প্রসারণ এবং বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। জানা গেছে, সামাজিক নিরাপত্তার বেষ্টনীতে স্থায়ীভাবে যুক্ত হয়েছে এক কোটি সাত লাখ দরিদ্র মানুষ।

এরা হচ্ছেন বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ও দুস্থ। আর বিনামূল্যে খাদ্য, টেস্ট রিলিফসহ বেশ কিছু কর্মসূচির মাধ্যমে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে আট কোটি ৭২ লাখ অতিদরিদ্র ও দুস্থদের কাছে। ফলে এসব জনগোষ্ঠী না খেয়ে বা ক্ষুধার্ত থাকতে হচ্ছে না। পাশাপাশি এসব কর্মসূচি জীবনমান উন্নয়নে দারিদ্র্য ও বৈষম্য কমাতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এ ছাড়া পৌনে ৯ লাখ ভূমিহীন পাচ্ছে বসতঘর ও ৭৪ লাখ গরিব শিক্ষার্থীকে দেওয়া হচ্ছে উপবৃত্তি। বিপুল জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দিতে নগদ অর্থ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে ৩৩ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা, খাদ্য সহায়তা যাচ্ছে ১৭ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা, ভূমিহীনদের বসতঘর নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২২ হাজার ১৪০ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাতে ব্যয় হচ্ছে ৪৩ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। এই মোট ব্যয় চলতি বাজেটের প্রায় এক-পঞ্চাংশ। চলতি বাজেটের আকার হচ্ছে পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক বলেছে বাংলাদেশের সুরক্ষা নেট কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ধরনের সহায়তার মাধ্যমে দারিদ্র্য ও দুর্বলতা হ্রাসে অবদান রাখছে।

এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আয়ের সুরক্ষার বিধান, কর্মজীবী ও বয়সি পুরুষ ও মহিলাদের জন্য অস্থায়ী কর্মসংস্থান এবং যুবতী মা ও শিশুদের সুস্থ বিকাশকে সমর্থন। সেখানে আরও বলা হয়, দরিদ্রতম পরিবারগুলোতে এই সুরক্ষা নেট কর্মসূচির প্রভাব আরও বাড়াতে বিশ্বব্যাংক ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করে আসছে।

এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ঢাকাস্থ কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বেষ্টনীতে যাদের আনা হচ্ছে তাদের বাছাই কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা আরও ঠিক করতে হবে। কারণ প্রকৃত অনেক ব্যক্তিই বাদ পড়ছেন এই কর্মসূচিতে। পাশাপাশি অনেকেই সুবিধা পাচ্ছেন যারা এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার মতো নয়।

তিনি বলেন, এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে অপচয় ও দুর্নীতি বন্ধ করতে পারলে যে অর্থ সাশ্রয় হবে তা দিয়ে উপকারভোগীদের ভাতার পরিমাণ আরও বৃদ্ধি সম্ভব হবে। এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে গরিব মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি নগদ সহায়তা দেওয়ার অংশ বাড়ানো দরকার।

কারণ মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে খাদ্য ও নগদ অর্থ উভয়ের মধ্যে সবচেয়ে কম খরচে নগদ সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় প্রথমবারের মতো দারিদ্র্যপ্রবণ ১১২টি উপজেলার সব দরিদ্র-প্রবীণ ব্যক্তিকে ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। এ জন্য গত বছরের চেয়ে এ বছর পাঁচ লাখ প্রবীণকে নতুনভাবে যুক্ত করা হয়েছে ভাতা দেওয়ার কর্মসূচিতে। বর্তমান ১১২টি উপজেলাসহ সারা দেশে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন ৪৯ লাখ মানুষ।

এ খাতে ব্যয় হবে দুুুই হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। জুলাই-সেপ্টেম্বরে (প্রথম প্রান্তিক) এ খাতে ৭৩৫ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। একইভাবে ১১২টি উপজেলার সব বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাকে এবারই প্রথম ভাতার আওতায় আনা হয়েছে।

ফলে নতুন করে সাড়ে তিন লাখ দরিদ্র বিধবা ভাতার আওতায় আসছে। নির্ধারিত উপজেলাসহ সারা দেশে বিধবাভাতা পাচ্ছে ২০ লাখ ৫০ হাজার জন। চলতি অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ আছে ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিকে অর্থ ছাড় করা হয়েছে ২০৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

এ ছাড়া করোনার কারণে দেশের সব প্রতিবন্ধীকে ভাতার আওতায় আনা হয়েছে চলতি অর্থবছরে। ফলে ১২ লাখ ৫৫ হাজার নতুন প্রতিবন্ধী এ বছর ভাতা পাবে। নতুন ও পুরনো মিলে মোট ১৮ লাখ প্রতিবন্ধী সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আসছে। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ৬২০ কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে তাদের দেওয়া হয়েছে ৪০৫ কোটি টাকা।

উল্লেখিত জনগোষ্ঠী ছাড়াও আরও যেসব শ্রেণি স্থায়ীভাবে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে প্রবেশ করেছেন তারা হলেন-সাত লাখ ৭০ হাজার মাতৃত্বকালীন দারিদ্র্য মা, ৮৬ হাজার অনগ্রসর হিজড়া ও বেদে, দুই লাখ ৭৫ হাজার কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মা, দুই লাখ মুক্তিযোদ্ধা, ১৫ হাজার শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং ছয় লাখ ৩০ হাজার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী। এর মধ্যে শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য ভাতা এবং সরকারি চাকরিজীবীদের দেওয়া হচ্ছে পেনশন সুবিধা।

সূত্র আরও জানায়, স্থায়ী সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াও সারা বছর আট কোটি ৭২ লাখ গরিব ও দুস্থ মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এ খাতে ব্যয় হচ্ছে ১৭ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা।

এর মধ্যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে সহায়তা পাচ্ছে আড়াই কোটি দুস্থ মানুষ। ভিজিএফ থেকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে এক কোটি ২০ লাখ এবং খাদ্য সহায়তা জিআর (জেনারেল রিলিফ) থেকে পাচ্ছেন দুই কোটি ৬০ লাখ গরিব মানুষ।

পাশাপাশি ওএমএস কর্মসূচির সহায়তা পাচ্ছেন ৮৬ লাখ ৭০ হাজার, বিজিডি পাচ্ছে ১০ লাখ ৭৬ হাজার, টিআর বা টেস্ট রিলিফ (নগদ) পাচ্ছে ২২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ। আর পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে খাদ্য সহায়তা পাচ্ছে ১১ লাখ ২৫ হাজার, কাজের বিনিময় খাদ্য ১০ লাখ ও কাজের বিনিয়ম নগদ সহায়তা পাচ্ছে ১৫ লাখ গরিব মানুষ। এ ছাড়া দরিদ্র মানুষের ৮০ দিনের কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন ২৬ লাখ ৫০ হাজার নারী ও পুরুষ।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় শিক্ষা খাতে চার ধরনের বৃত্তি কর্মসূচিতে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে ৭৫ লাখ ২৩ হাজার গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীকে। এ খাতে ব্যয় হচ্ছে চার হাজার ৯০ কোটি টাকা। সর্বশেষ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে নতুন যুক্ত হয়েছে আট লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি ভূমিহীন পরিবার।

মুজিববর্ষে সরকার তাদের ঘর উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ২২ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। এর প্রথম ধাপে ৬৬ হাজার ১৮৯ পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হয় এক হাজার ৬৪৭ কোটি টাকা।

বাংলার বিবেক ডট কম – ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 BanglarBibek
Customized BY NewsTheme