1. admin@zzna.ru : admin@zzna.ru :
  2. md.masudrana2008@gmail.com : admi2017 :
  3. info.motaharulhasan@gmail.com : motaharul :
  4. email@email.em : wpadminne :

বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে তবুও বিভ্রাট

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ১৯২ বার

অনলাইন ডেস্ক : চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের মধ্যে সারা দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের রেকর্ড গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। ২০০৯ সালে ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা থেকে বর্তমানে ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৩৪০ মেগাওয়াটে। সবমিলিয়ে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা বেড়েছে। তারপরও অহরহ বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। বিতরণ ব্যবস্থায় অনিয়ম থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে গ্রাহকরা।

বাংলাদেশে চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অনেক বেশি ধরা হয়েছে এবং দরকারের চেয়ে ১৬টির বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণেরও অনুমতি দেওয়া হয়। আর তাই অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র অলস বসে রয়েছে, এমনটাই বলছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলেছেন, আগামী অর্থবছরে সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা জোরদার করে গ্রাহকের নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে ৩০ হাজার ৭৩৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।

তারপরও অহরহ বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। বিতরণ ব্যবস্থায় অনিয়ম থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অসংখ্য গ্রাহক। কিন্তু বিদ্যুৎ নিরবচ্ছিন্নভাবে সরবরাহ করার জন্য বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন সেভাবে হয়নি। ফলে সক্ষমতা থাকার পরও প্রায় ৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। এর কারণ ওই বিদ্যুৎ উৎপাদন করলেও তা বিতরণ করার মতো অবকাঠামো দেশে এখনো নেই।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিদিন গড় বিদ্যুৎ চাহিদা প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট। ২০০৯ সালে ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা থেকে বর্তমানে (২০২০-২১) ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৩৪০ মেগাওয়াটে।

চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি নেই। তবু রাজধানীর কোনো কোনো এলাকায় দিন-রাতে এক-দুই বার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বিভ্রাট সাধারণ মানুষকে অবাক করছে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে বেশি। এ কারণে চলতি বোরো মৌসুমে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। এত বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরও অফপিক আওয়ারে লোডশেডিং নিয়ে গ্রাহকদের মনে প্রশ্ন জাগছে। লোডশেডিং আর বিদ্যুৎবিভ্রাট বিদ্যুৎ বিভাগের এ দুটি শব্দের অর্থ এখনো সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে পরিষ্কার হয়নি।

রাজধানীর অভিজাত এলাকা বসুন্ধরা, যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, রায়েরবাগ, মাতুয়াইল, দনিয়া, ডেমরা, খিলগাঁও, বাসাবো, রামপুরা, বনশ্রী, মুগদা, বনগ্রাম, ওয়ারীসহ পুরান ও নতুন ঢাকার অনেক এলাকা থেকেই গত এক মাসে দিন-রাতে কয়েকবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা পর্যায়ের গ্রাহকদের অভিযোগ আরও বেশি। বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, সম্প্রতি সারা দেশে বোরো আবাদ শুরু হওয়ার কারণে কোনো কোনো এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা ঘটেছে। তবে গ্রাহকদের অভিযোগ, ঝড়-বৃষ্টি ছাড়া ভালো আবহাওয়াতেও বিদ্যুৎ যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।

দনিয়া রোডের বাসিন্দা আসলাম হোসেন বলেন, গত পরশু রাত সাড়ে ১১টায় সন্তানের লেখাপড়া শেষ করে ঘুমানোর আয়োজন করছি। এর মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেল। প্রায় আধা ঘণ্টা অপেক্ষার পর বিদ্যুৎ এলো। তিনি জানান, সম্প্রতি ওই এলাকায় প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার বিদ্যুৎ চলে যায়। কখনো ১০-১৫ মিনিট পর চলে এলেও কখনো আবার আসতে দেরি হয়। একই ধরনের অভিযোগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দার।

পশ্চিম রামপুরার বাসিন্দা আয়নাল ফকির জানান, সবসময় বাসায় থাকা হয় না। তাই ২৪ ঘণ্টার হিসাব নেই। তবে সকাল ও রাত মিলিয়ে যেটুকু সময় বাসায় থাকা হয়, মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে আগের মতো নয়।

বড় মগবাজার এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, প্রায় প্রতি দিনই বিদ্যুৎ যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। কখনো ১০ মিনিট, কখনো আধা ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ আসে। ঢাকার বাইরে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, বেশিরভাগ জেলা-উপজেলায় প্রায় প্রতিদিনই এক-দু’বার বিদ্যুৎ যায়।

এদিকে বর্তমানে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে দাবি করেছেন ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) পরিচালক (অপারেশন) প্রকৌশলী এটিএম হারুন অর রশীদ। তিনি জানান, রাজধানীর অধিকাংশ বিতরণ লাইন দীর্ঘদিনের পুরনো। এ ছাড়া লাইনের ওপর গাছপালা রয়েছে। ঝড় হলে বা অনেক সময় একটু বেশি বাতাস হলেও ডালপালা এসে লাইনের ওপর পড়ে। তখন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা ঘটে বলে তিনি জানান।
জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেটে নতুন অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জন্য ২৬ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন তিনি।

বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে এই বরাদ্দ ১ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা কম। চলতি বছরে সংশোধিত বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ ছিল ২৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা। বাজেট ঘোষণার একদিন আগেই বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছিলেন, আগামী অর্থবছরে সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা জোরদার করে গ্রাহকের নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে ৩০ হাজার ৭৩৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে তার মন্ত্রণালয়।

তবে প্রত্যাশার চেয়ে কম বরাদ্দ পেয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, বর্তমানে ১৬ হাজার ৮৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৪৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। দুই হাজার ৭৮৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১২টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি স্বাক্ষর প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া ৬৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন বলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান। ভবিষ্যতে আরও ১৯ হাজার ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনার কথাও বলেন তিনি।

বিদ্যুৎ খাতের মেগাপ্রকল্পগুলোর তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল প্রজেক্ট, মাতারবাড়ি ১২শ’ মেগাওয়াট আল্ট্রসুপার ক্রিটিক্যাল কোল প্রজেক্ট এবং পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। যৌথ বিনিয়োগে মহেশখালীতে ১০ হাজার মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার সহায়তায় রূপপুরে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে।

এছাড়া রামপাল, পায়রা, মাতারবাড়ি ও বাঁশখালির মতো নির্মাণাধীন বড় প্রকল্পসহ ২১টি কয়লা-ভিত্তিক কেন্দ্র বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সরকারের অনুমতি পেয়েছিল। তার মধ্যে ১৬টিই বাদ পড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

বাংলার বিবেক /এম এস

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 BanglarBibek
Customized BY NewsTheme