তানহা : কেউ পছন্দ করেন ঘুম ভাঙার সময়। কিন্তু যৌন সম্পর্কের ইচ্ছার সময় নির্বাচন দিয়েও অনেক ক্ষেত্রে বোঝা যায় শরীরের অবস্থা। হালে ইংল্যান্ডের স্নায়ুবিদ ন্যান ওয়াইজ তাঁর গবেষণায় এমনই কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন।
এ বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়ে উঠে এসেছে কতগুলি তথ্য। দেখা গিয়েছে, পুরুষরা সাধারণত ঘুম ভাঙার সময়ে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে বেশি পছন্দ করেন। আর বেশির ভাগ মহিলার মধ্যে ঘুমতে যাওয়ার আগে শারীরিক সংম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার ইচ্ছে বেশি থাকে। বয়সের বিচারে এই পছন্দ-অপছন্দের সময় নিয়ে ভাগাভাগি রয়েছে। দেখা গিয়েছে, তুলনায় কম বয়সি যাঁরা, তাঁরা রাতের দিকে এই ধরনের সম্পর্কে বেশি মাত্রায় লিপ্ত হতে চান। আর বয়স যত বাড়তে থাকে, ততই পছন্দের সময় ক্রমশ ভোরের দিকে চলে যেতে থাকে। এ বিষয়ে ৩টি আলাদা আলাদা সময় নিয়ে কথা বলা হয়েছে এই গবেষণায়।
ভোরে: বয়স যত বাড়ে তত তাড়াতাড়ি ঘুমনোর প্রবণতা আসে। সেই কারণেই বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে ভোরে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয় বলে দাবি করা হয়েছে এই গবেষণায়। এ ছাড়াও দেখা গিয়েছে, পুরুষদের মধ্যে সকাল ৮টা নাগাদ সবচেয়ে বেশি মাত্রায় টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ হয়। এই হরমোন যৌন ইচ্ছা বাড়ানোর কাজ করে। তাই সকালের দিকে পুরুষের মধ্যে এই ইচ্ছা বাড়তে থাকে। ভোরের দিকে কোনও পুরুষের যৌন ইচ্ছের মাত্রা বেশি মানেই, তাঁর শরীরে টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণের মাত্রা ভাল। অর্থাৎ তাঁর শরীর এ সব দিক থেকে সুস্থ। শুধু তাই নয়, যৌন সম্পর্কের ফলে এনডরফিনস বা ডোপামিনের মতো হরমোনের ক্ষরণও বাড়ে। যা মন ভাল রাখে।
পাশাপাশি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, যৌন সম্পর্কের ফলে এক ধরনের ক্লান্তিও হয়। যাঁদের সারা দিন খুব পরিশ্রম করতে হয়, তাঁরা অনেকেই ভোরে যৌন সম্পর্কের কারণে আবার ঘুমিয়ে পড়তে বাধ্য হন। সেই কারণেই ইচ্ছে থাকলেও অনেকে এই সময়টা এড়িয়ে যান।
রাতে: যে সব মহিলাদের নিয়ে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই বলেছেন, রাতে ঘুমনোর আগে শারীরিক সম্পর্ক তাঁদের বেশি পছন্দের। দেখা গিয়েছে, তুলনায় সারা দিন যাঁদের অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়, তাঁদের মধ্যে রাতে শারীরিক সম্পর্কে আগ্রহ বেশি। যৌন সম্পর্কের ফলে প্রোল্যাকটিন এবং অক্সিটোসিন নামে হরমোনের ক্ষরণ বেশি হয়। এই হরমোনগুলি ঘুম পাড়াতে সাহায্য করে।
গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, রাতে যাঁরা যৌন সম্পর্কে বেশি উৎসাহ দেখান, তাঁদের অনেকেরই উদ্দেশ্য, সাময়িক ক্লান্তি কাটানো এবং তার পরে ঘুমিয়ে পড়া। যাঁরা সারা দিন মানসিক ভাবে অনেকটা ব্যস্ততার মধ্যে কাটান, তাঁদের পক্ষে দিনের শেষে যৌন সম্পর্কের সঙ্গে রোম্যান্টিকতাকে মেশানোর ক্ষমতা তুলনায় কমে আসে। এমনটাই বলা হয়েছে এই গবেষণায়।
দুপুরে: সপ্তাহান্তের দুপুরের যৌন সম্পর্ক পছন্দ করেন কেউ কেউ। এর পিছনে কারণ হিসেবে গবেষণায় বলা হয়েছে, শারীরিক সম্পর্কের অভ্যাস থেকে বেরতে অনেকেই এই সময়টা বেছে নেন।
তবে কোন সময়টা যৌন সম্পর্কের জন্য ভাল, কোনটা সময় খারাপ— এমন কোনও নির্দিষ্ট সংজ্ঞা যে নেই, তা বলা হয়েছে এই গবেষণায়। এটাও বলা হয়েছে, পুরোপুরি শারীরিক সম্পর্ক না হলেও পরস্পরকে আদর, ছোট ছোট স্পর্শও কখনও কখনও অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। এবং সেগুলিও একই ধরনের হরমোনের ক্ষরণ ঘটায়। আর এর বাইরে সঙ্গী বা সঙ্গিনীর মন বুঝে, তাঁর সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার একটা প্রবণতাও কাজ করে সময় নির্বাচনের ক্ষেত্রে।
বাংলার বিবেক /এইচ
Leave a Reply