তানহা : আমাদের কাজ করার যাবতীয় শক্তির উৎসই হল খাবার। সঠিক সুষম খাবার আমাদের যেমন সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে তেমনই দেহের স্বাভাবিক ওজন নিয়ন্ত্রণেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে সব সময় খাবার খাওয়ার প্রবণতা বা অহেতুক খিদে খিদে ভাব আপনার অজান্তে শরীরে কোনও বড় ধরনের সমস্যা বা রোগ ডেকে আনছে না তো? যদি আপনার ক্ষেত্রে এমনটা হয় তাহলে আজ থেকেই সাবধান হোন।
খিদে না পেলেও খাই খাই ভাব বা সব সময় খাওয়ার লক্ষন এমন ভাব কিন্তু মোটেও শরীরের পক্ষে ভালো নয়। সময় নেই অসময়ে খাই খাই ভাব শরীরে হরমোন জনিত সমস্যার পূর্বাভাস। হতে পারে বড় কোনও রোগের লক্ষন। এছাড়াও শরীরে জলের অভাব বা রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে গেলে এই ঘন ঘন খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
এমনকি কেউ দুঃশ্চিন্তায় ভুগলেও অতিরিক্ত মানসিক চাপ কমাতে অনেকেই মিষ্টির প্রতি বেশি ঝুঁকে পড়েন। চিপস, আইসক্রিম, চকলেট জাতীয় খাবার খেতে বেশি পছন্দ করেন৷ তবে কোনও কিছুই যে শরীরের পক্ষে অতিরিক্ত ভালো নয় তা ফের মনে করিয়ে দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
কারণ, সব সময় খাই খাই ভাব বা মাঝে মধ্যে খিদে পেলেই যা খুশি তাই খেয়ে নেওয়া শরীরের জন্য একদমই ভালো নয়। এতে মেদ যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনই সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব বা অবসন্নতার সৃষ্টি হয়। যা আমাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে।
তবে যে উপায়ে সব সময় এই খাই খাই মনোভাব বন্ধ করা যাবে তা হল…
১. স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে শারীরিক কর্মক্ষমতা ঠিক রাখতে এবং বিএমআর ঠিক রাখতে প্রতিদিন একই সময়ে আহার গ্রহণ করুন। সারাদিন টুকটাক খাবার না খেয়ে বা একবারে পেট ভরতি করে ভাত না খেয়ে দু/ তিন ঘন্টা অন্তর অন্তর হেলদি খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।
২. খিদে পেলেই সঙ্গে সঙ্গে খাবার খাবেন না। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার আমরা খেতে পারি না। বরং খিদে পেলে ১০ থেকে ২০ মিনিট পর খাবার খান।
৩. খেতে বসে কমপিটিশন নয় বরং কে কত আস্তে চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন সেই অভ্যাস করুন। কারণ ঝটপট খেলে খাবার ঠিকমতো হজম হয় না। রক্তের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও কিছুক্ষন পর আবার খিদে পেয়ে যেতে পারে। সুতরাং খেতে বসে সময় নিয়ে ভালোভাবে চিবিয়ে খাবার খান। এতে সুস্থ থাকবেন আপনি।
৪. খাবার খাওয়ার আগে অথবা আধঘন্টা পরে জল পান করুন। এতে হজম প্রক্রিয়া ভালো হয়। আর খিদে পেলেই চিপস, চকলেট না খেয়ে হালকা কিছু পুষ্টিকর স্ন্যাকস খেতে পারেন।
৫. অতিরিক্ত ফাস্টফুড না খেয়ে বাড়িতে মনপছন্দ কিছু বানিয়ে খান৷ এতে মন এবং শরীর দুটোই ভালো থাকবে আপনার।
৬. সকালের খাবার শুরু করুন হালকা কিছু দিয়ে নয়। প্রাতঃরাশে থাকুক পুষ্টিকর প্রোটিন, কার্বহাইড্রেট, ভিটামিন, মিনারেলস যুক্ত খাবার। যা আমাদের সারাদিনের কাজ করার শক্তি জোগাবে৷
৭. প্রতিদিন একই টাইমে লাঞ্চ করুন এবং খাওয়ার সময় টিভি, মোবাইল, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকুন৷ কী খাচ্ছেন সেটা ভালো করে দেখুন আস্তে আস্তে চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
৮. এছাড়াও শরীর সুস্থ রাখতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন ব্যায়াম করুন, যোগা করুন। রাতে শোওয়ার আগে ধ্যান করুন। প্রচুর জল পান করুন। অহেতুক রাত না জেগে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ার অভ্যাস করুন। এছাড়াও সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শুরু করুন আপনার দিন। মনের স্বাস্থ্যও যেমন ভালো থাকবে শরীর স্বাস্থ্যও হবে তেমন সুঠাম ।
বাংলার বিবেক /এইচ
Leave a Reply