1. admin@zzna.ru : admin@zzna.ru :
  2. md.masudrana2008@gmail.com : admi2017 :
  3. info.motaharulhasan@gmail.com : motaharul :
  4. email@email.em : wpadminne :

বাণিজ্যিকভাবে বিড়াল পালন

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ, ২০২১
  • ২৭১ বার

অনলাইন ডেস্ক : পাঁচটি বিড়াল। পাঁচজনের নাম বেশ অদ্ভুত। বুল্ডু, মাসা, জোজো, ম্যাংগো এবং লিচি। তাদের সামনে রাখা বিভিন্ন খেলনার যন্ত্রাংশ দিয়ে যে যার মতো খেলছে। কেউ পা দিয়ে প্লাস্টিকের বলে টোকা দিচ্ছে আবার বলের সঙ্গে সঙ্গে দৌড় দিচ্ছে সবাই মিলে। মধুর খুনসুটি চলছে তাদের মধ্যে। তাদের সঙ্গ দিচ্ছেন একজন ব্যক্তি। ব্যক্তিটির নাম প্রসেনজিৎ কুমার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন তিনি।

চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিড়াল পালন শুরু করেছেন রাবির এই শিক্ষার্থী। বিড়াল পালনের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন কিটিক্যাট নামক একটি ভিন্নধর্মী প্রতিষ্ঠান। রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের বহরমপুর বাইপাস মোড় থেকে প্রায় ২০০ মিটার সামনে এগোলেই হাতের ডান পাশে রাস্তার সঙ্গে বিড়ালের দেয়ালচিত্র সংবলিত কিটিক্যাট নামক এই প্রতিষ্ঠানটি দেখা যাবে।

যেখানে বিড়াল পালন ছাড়াও রয়েছে একটি ফস্টার হোম। বিড়াল পালনকারীরা যে কোনো সময়ে তাদের বিড়ালটিকে সাময়িক সময়ের জন্য সার্ভিস চার্জ প্রদানের মাধ্যমে রেখে যেতে পারেন ফস্টার হোমে। এখানে অতিথি বিড়ালের জন্য রয়েছে আলাদা প্রশস্ত খাঁচা, ইনডোর এবং আউটডোর প্লে গ্রাউন্ড। বিড়াল রাখবার জন্য তিন ধরনের প্যাকেজ অফারের মধ্যে বিড়াল পালনকারী বেছে নিতে পারবেন নিজের সুবিধামতো প্যাকেজ। এছাড়াও কিটিক্যাটে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ব্রান্ডের আমদানিকৃত ড্রাই ক্যাট এবং ডগ ফুড, জেলি ফুডসহ বিড়ালের জন্য হরেক রকমের খেলনা আর লিটার, স্কুপারসহ প্রয়োজনীয় এক্সেসরিজ। শুধু কি তাই! কিটিক্যাট থেকে অভিজ্ঞ ভেটেরিনারি চিকিৎসক দ্বারা কুকুর-বিড়ালের ভ্যাক্সিনেশনসহ নানা ধরনের চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে।

কুকুর-বিড়ালদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এমন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানান প্রসেনজিৎ। তিনি জানান, গত বছরের মার্চে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হলে ক্যাম্পাসের সব খাবারের দোকানও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ক্যাম্পাসে থাকা শতাধিক কুকুরকে না খেয়ে থাকতে হয়। ঠিক এ সময় প্রসেনজিৎ কুমারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী নিজেরা রান্না করে ক্যাম্পাসের কুকুর-বিড়ালদের খাওয়াতে শুরু করে। সেই থেকে কুকুর-বিড়ারদের প্রতি তাঁর ভালোবাসা জন্মে যায়।

সেই ভালোবাসা থেকে প্রসেনজিৎ বিড়াল পালন প্রসঙ্গে মার্কেটিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী তনুজা আমরিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তনুজা সহযোগিতার আশ্বাস দিলে বিড়াল পালনের উদ্যোগ নেয় প্রসেনজিৎ। পরবর্তীতে তনুজা আমরিনের স্বামী নাদিম আদনান শামস, ভাই আশিকুর রসুল এবং প্রসেনজিৎ কুমার মিলে কিটিক্যাট প্রতিষ্ঠা করেন।

সারা দিন বিড়ালদের সঙ্গে সময় কাটান প্রসেনজিৎ। বিড়ালগুলোর সঙ্গে সময় কাটাতে কেমন লাগে? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রসেনজিৎ বলেন, শুধু রাতে ঘুমানোর সময়টুকু বাদে প্রায় সারা দিনই তাদের সঙ্গে থাকি। তাদের সঙ্গে মাঝে মাঝে ফস্টার হোমে খেলা করি। তাদের অন্যান্য খাবারসহ মুরগির সিদ্ধ করা মাংস বা মাছ খেতে দিই। মাসা প্রেগনেন্ট থাকায় তার বেশি যত্ন নেই। অনেক সময় অসুস্থ কিংবা হারানো বিড়াল কেউ পেলে আমাদের রেসকিউ সেলে রেখে যায়। পরবর্তীতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে এসব বিড়ালের মালিকের সন্ধান পেলে প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের কাছে হস্তান্তর করি।

প্রায় আটদিন ফস্টার হোমে নিজের তিনটি বিড়াল রেখে রাজশাহীর বাইরে ভ্রমণে যায় রাবির চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের ভ্রমণে যাব, কিন্তু এতদিন বিড়ালগুলোকে কোথায় রাখব এ নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এর মাঝে খোঁজ পেলাম কিটিক্যাট নামক প্রতিষ্ঠানটির। পরে বিড়ালগুলো সেখানে রেখে আসলাম। সেখানে অনেক আন্তরিকতার সঙ্গে বিড়ালগুলো গ্রহণ করা হয়েছিল। এবং তিনবেলা ওদের খাওয়ানো, খেয়াল রাখা কোনো কিছুর কমতি হয়নি। যখনই ওদের কথা জিজ্ঞেস করতাম প্রসেনজিৎ দাদা প্রতিবারই তাদের ছবি তুলে পাঠিয়ে দিতো।

ক্লিনিকের বিষয়ে কিটিক্যাটের ভেটেরিনারি ডাক্তার নিয়ামত উল্লাহ বলেন, কিটিক্যাট থেকে পেট এনিমেলদের নিয়মিত ভেক্সিনেশন ছাড়াও স্ট্রিট এনিমেলগুলোরও সাধ্যমতো ফ্রি ভেক্সিনেশনের ব্যবস্থা করা হবে। বিড়ালের রিসকিউং, লিটারিং, বিভিন্ন ধরনের অপারেশনসহ প্রায় সবরকমের ব্যবস্থা থাকবে। ২৪ ঘণ্টা সেবা প্রদানের জন্য সেখানে আরও বেশ কয়েকজন চিকিৎসক থাকবেন।

কিটিক্যাট নিয়ে কতটা আশার আলো দেখছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কিটিক্যাটের পরিচালক নাদিম আদনান শামস বলেন, কিটিক্যাটের মতো এমন পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান দেশের অন্য কোথাও নেই। এখানে আমরা বাণিজ্যিকভাবে বিড়াল পালনের পাশাপাশি বিড়াল এবং কুকুরের ফুড-এক্সেসরিজ, রেসকিউ, ফস্টার হোম এবং চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। দেশের অন্যান্য জায়গার ন্যায় রাজশাহীর মানুষেরও এখন মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে। এখন অনেকে নিজেকে টেনশনমুক্ত রাখতে হলেও বিড়াল কিংবা কুকুর পালন করছেন। সবমিলিয়ে আমার নিজের কাছে মনে হয় এটার ভালো ভবিষ্যৎ আছে।

সার্বিক বিষয়ে কিটিক্যাটের সভাপতি আশিকুর রসুল বলেন, আমরা মূলত করোনাকালে লকডাউনের সময়ে এ বিষয়টি ভেবে দেখি। সে সময়ে বেশ কিছুদিন আমরা রাবি ক্যাম্পাসের কুকুরদের খাওয়াই। পরবর্তীতে সেটিকেই আমরা প্রতিষ্ঠানিকভাবে রূপ দিয়েছি। আমাদের ইচ্ছা আছে রাস্তার কুকুর-বিড়ালদের গলায় বেল্ট পরিয়ে দেবো। যাতে রাতের বেলায় রাস্তা পারাপারের সময় সেই বেল্ট থেকে আলো প্রতিফলিত হয়। আমরা আমাদের কিটিক্যাটের লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশ রাস্তার কুকুর-বিড়ালদের সেবায় ব্যয় করবো।

বাংলার বিবেক /এম এস

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 BanglarBibek
Customized BY NewsTheme