1. admin@zzna.ru : admin@zzna.ru :
  2. md.masudrana2008@gmail.com : admi2017 :
  3. info.motaharulhasan@gmail.com : motaharul :
  4. email@email.em : wpadminne :

লকডাউন শাটডাউনে, বিষ ঢেলে দাও মুখে

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১
  • ১১৬ বার

রাজশাহী : কখনো প্রখর রোদ, কখনো অঝোর বৃষ্টি থেমে নেই সদর আলীর পেডেল। একলা পৃথিবীতে কেউ নেই তারপরও পেট নিয়ে ভাবনায়। দুপুরে খাবার খাওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন,”লকডাউন শাটডাউনে, বিষ ঢেলে দাও মুখে।”

মোঃ সদর আলীর (৮৫) জন্মস্থান নওগাঁর দামড়হাট। বর্তমানে স্থায়ী ঠিকানা নেই। ভাড়া থাকেন রাজশাহী শহরের বারোই পাড়ায়। আত্মীয়-স্বজন নেই, স্ত্রীর মৃত্যুর পর শুধু মেয়ে ছাড়া কেউ ছিল না।

মেয়ে বিয়ের পর দুইটি সন্তানের জন্ম দেন। অসুস্থতার কারণে মেয়ে মোছাঃ জাহানারাও মরে যায়। একবছর বেশি হলো। জামাই তরিকুল, দ্বিতীয় বিয়ে করে দুই সন্তান নাতি আতিকুল ও নাতনি নুরজাহান কে নানার কাঁধে ঝুলিয়ে পগারপার। দুনিয়ার বুকে যুদ্ধের মুখোমুখি ২৫ বছর বয়সে হয়েছিলেন। এখন বুড়ো বয়সে করোনা ভাইরাসের মুখোমুখি যুদ্ধ। দুই নাতিনাতনির দায়ভার নিয়ে রাস্তায় নেমেছে।

করোনা ভাইরাসের মৃত্যুর শশ্মান দেখেও, নাতিনাতনির খাবার দিয়ে, হাতে দুই যুগের পুরাতন ক্যাসিও ঘড়ির সময় দেখে লুঙ্গি ও জামা গায়ে রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। দেখা হয় রাজশাহীর বর্ণালীতে, হাজারো মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে,যেন, দুপুরের আগে ১০০ টাকার ভাড়া হোক। দুপুরের খাবার কখনো বিস্কুট কেক অথবা “বিড়ালের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ল” অর্থাৎ সপ্তাহে ২,৩ দিন ভাত হোটেলে জোটে। ঘরে ফেরে ১০০-১৫০ টাকা নিয়ে। রান্নার কেউ নেই হোটেলের খাবার খেতে হয়। আসলে সময় আর চোখের অসুখে রান্না সম্ভব হয়না তাঁর। সমস্ত ক্লান্তি তাঁর দেহে ও মাথায়। মাস শেষে ঘর ভাড়া দিতে হবে।

রিকশার গ্যারেজে ৫০ টাকা দিন শেষে দিতে হয়। বেচারার ঔষধ সেবনের জন্য ২০০ খরচ যায়, বলে জানা যায় স্থানীয় সূত্রে।

রিকশাচালক সদর আলী জানান, কাফনের কাপড় যেন সরকার পাঠায়। লকডাউন শাটডাউনে খাবার জো নেই। ত্রাণ বা টাকা পাইনা। বেঁচে থাকার সম্বল আর অবলম্বন কোনটাই নেই। রিকশা নিয়ে বের হলে চাকার বাতাস ছেড়ে দিচ্ছে। আমি বুড়ো মানুষ,খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করে,মারার ভয় দেখায়। কিভাবে বাঁচব? লকডাউন শাটডাউনে বিষ ঢেলে দাও মুখে।

গ্যারেজের মালিক মামুন বলেন, মোঃ সদর আলীর মত হাজারো মানুষ হেনস্থার শিকার। সংসারে অভাবের কারণে ঝগড়া বেশি হচ্ছে। পরকীয়া বাড়ছে, বাল্যবিবাহ বাড়ছে। ইন্টারনেটে আসক্ত ছেলে মেয়ে পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আর সদর আলীর রিকশা ছাড়া গতি নাই। তার দূরাবস্থা লকডাউনে বেশি। বড় বড় দান করা লোকেরা দেখেও না দেখার ভান করে চলে যায়। উপরওয়ালা জানেন না খেয়েই সদর আলীর মত মানুষের দুনিয়া থেকে বিদায় হয় কিনা।

বাংলার বিবেক /এম এস

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 BanglarBibek
Customized BY NewsTheme