1. admin@zzna.ru : admin@zzna.ru :
  2. md.masudrana2008@gmail.com : admi2017 :
  3. info.motaharulhasan@gmail.com : motaharul :
  4. email@email.em : wpadminne :

রাজশাহীতে মাদকের আধিপত্য বিস্তার, অজ্ঞাত কারণে অধরা আলিম কালু

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২১
  • ২৭৭ বার
রাজশাহীতে মাদকের আধিপত্য বিস্তার, অজ্ঞাত কারণে অধরা আলিম কালু
রাজশাহীতে মাদকের আধিপত্য বিস্তার, অজ্ঞাত কারণে অধরা আলিম কালু

ইফতেখার আলম: চারঘাটের সলুয়া ইউনিয়নের চামটা গ্রামের আব্দুল আলিম কালু (৩৮)। চার বছর আগেও ইটভাটায় কাজ করতেন একজন শ্রমিক হিসেবে।

প্রথমদিকে লেবার হিসেবে কাজ করলেও তার স্ত্রী সাহারা (৩৫) কে দিয়ে করাতেন মাদক ব্যবসা। ধীরে ধীরে মাদক ব্যবসায় বিস্তার ঘটিয়ে আজ তিনি চারঘাটে মাদক স¤্রাট হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। তবে অজ্ঞাত কারণেই তিনি রয়েছেন পুলিশ প্রশাসন থেকে ধরাছোয়ার বাইরে।

রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আলিম কালু একাধিক মাদক মামলার আসামী। বিভিন্ন সময় র‌্যাব, ডিবি, নগর ও জেলা পুলিশের কাছে মাদকসহ ধরাও পড়েছেন তিনি ও তার সহযোগী।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্লাহ কাজল বলেন, ‘আলিম কালুর বিরুদ্ধে একাধিক মামলার আমাদের ডাটাবেইজে রয়েছে। তার মাদক সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়াও তার সাথে যদি আমাদের কোন সদস্য যুক্ত থাকলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।’

এদিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিচালক মো. আরেফিন জুয়েল প্রতিবেদককে বলেন, ‘গত ২ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে আলিম কালুর চাচাতো ভাই মো. রাসেল ২০০ গ্রাম হেরোইন ও ৫০ পিচ ইয়াবাসহ ধরা পড়ে। জবানবন্দিতে রাসেল স্বীকার করেছে তার চাচাতো ভাই কালুর মাদকদ্রব্য সে পাচার করত। এনিয়ে কালুর নামের পলাতক মামলা করা হয়েছে বেলপুকুর থানায়।’

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চারঘাট উপজেলার সলুয়া ইউনিয়নের চামটা গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে আলিম কালু। এক সময় হলিদাগাছিতে মুন্তাজ আলীর ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন। একই সাথে স্ত্রী শাহারা খাতুনকে দিয়ে করাতেন মাদকের ব্যবসা। ছোট ছোট চালানের মাদক কারবারে ঘুরে যায় ভাগ্যের চাকা। গড়েছেন অঢেল সম্পদ। এখন চারঘাটে মাদকের গডফাদার হিসেবে এক নামে পরিচিত আলিম কালু। তার হাতেই চারঘাটে মাদকের একক নিয়ন্ত্রণ।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, চামটা গ্রামে রাস্তার পাশে বানিয়েছেন একটি আলিশান বাড়ি। বাড়ি তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ৫০ লক্ষ টাকা। স্ত্রীর নামে বাড়ির নামকরণ করেছেন ‘শাহারা মঞ্জিল’। বাড়ির পাশেই প্রায় দেড় বিঘার একটি বিশাল পুকুর নিয়েছেন লিজে। রয়েছে একটি গরুর খামার যেখানে প্রায় ৮-১০টি গরু রয়েছে। সম্প্রতি একটি ফেজার ব্রান্ড্রের আড়াই লাখ টাকা দামের একটি বাইকও কিনেছেন, কিনেছেন ৩৫ লক্ষ টাকা দিয়ে ৩ বিঘা জমি। একটি ডিসকভার ও একটি হিরো হাঙ্ক বাইকের মালিকও তিনি। এছাড়াও নামে-বেনামে রয়েছে বিভিন্ন সম্পত্তি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, নগদ অর্থ কালু নিজের কাছে রাখেন না, রাখেন তার বড় ভাই আফাজের হেফাজতে। ব্যবসার টাকার হিসাব থাকে তার অধীনে। কালুর মাদক ব্যবসার লক্ষাধিক টাকার আদান-প্রদান হয় বিকাশের দুটি এজেন্ট ও কয়েকটি ব্যক্তিগত নম্বরের মাধ্যমে। তার বাড়িতে কয়েক লক্ষাধিক টাকা নগদ গচ্ছিত রাখেন তিনি। প্রশাসনিক হয়রানি কিংবা গ্রেফতার এড়াতে ওই মোটা অংকের অর্থ নিজ হেফাজতে রাখেন তিনি। মাস দুয়েক আগে বগুড়ার আমর্ড পুলিশ ব্যাটেলিয়নের একটি টিম তাকে ভোর ৫টার দিকে তার বাড়ির ছাদে জিআই পাইপের ভেতর থাকা ইয়াবা ও হেরোইন জব্দ করে। এ ঘটনায় তাকে সে সময় গ্রেফতারও করে এপিবিএন এর সদস্যরা। পরে তিন লক্ষ ৫০ হাজর টাকার বিনিময়ে মুক্তি মেলে তার।

তিনি আরও জানান, মাস খানেক আগে এক হাজার পিচ ইয়াবাসহ ঢাকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তার হাতে ধরা পড়ে কালুর শালা শাহারুল। শালাকে ছাড়াতে দেড় লাখ টাকা প্রদান করেন তিনি। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে মুক্তি মেলে না শাহারুলের। তবে প্রদেয় একলাখ টাকা ফিরে পান তিনি।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে ভয়ঙ্কর তথ্য। সেটি হল- আলিম কালুর গরুর খামারের আড়ালে চালান মাদক ব্যবসা। সেখানে রেখেছেন হেরেনইন প্যাকেট করার মেশিন। প্যাকেটের গায়ে শীল ব্যবহার করেন টিউবয়েল মার্কা। হেরোইন পরিমাপক পাল্লাও রয়েছে তার কারখানায়। এ মেশিন দিয়ে চাহিদা অনুযায়ী ওজন করে সরবরাহ করেন খদ্দেরদের কাছে। এসব গোপন কাজে কালুর একমাত্র সহযোগী তার স্ত্রী শাহারা।

এখানেই শেষ নয়, হেরোইন ও ইয়াবার পাশাপাশি কালুর রয়েছে অস্ত্রের ব্যবসা। বাঘা, পুঠিয়া, চারঘাট এলাকায় যে সকল অস্ত্র ও হেরোইনের বড় বড় চালান ধরা পড়ে এসকল মাদক ও অস্ত্রের সাথে রয়েছে আলিম কালুর যোগসূত্র। মূলত: তার মাদক ও অস্ত্রের স¤্রাজ্য গড়েছেন প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে। এমনকি নিজের মাদক ব্যবসার সুদৃঢ়তার লক্ষ্যে চারঘাট সলুয়া ইউনিয়নে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মেম্বার পদে নির্বাচন করছেন তিনি।
জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক সদস্য তাদের মাদক আলিম কালুর নিকট তার জব্দকৃত মাদকদ্রব্য সরবরাহ করে। সম্প্রতি সপ্তাহ দেড়েক পূর্বে কালুর নিকট ইয়াবা ও হেরোইন বিক্রি করেছেন ওই সদস্য। তারপরও অজ্ঞাত কারণে পড়ছেন না ধরা। অনেক টায় আড়ালে চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন সহযোগীদের মাধ্যমে মাদকের রমরমা ব্যবসা।

মাদকের ও অস্ত্রের সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিবেদককে আলিম কালু বলেন, ‘এসব ফালতু কথা। আমি জমিদার ঘরের ছেলে। আমার বাপ-দাদার জমিজমার অভাব নাই বলে ফোনটি আকাশ নামের এক ব্যক্তির কাছে ধরিয়ে দেন। পরে আকাশ জানান এতোবেশি কথা বলা যাবে না বলে ফোন কেটে দেন।’
এবিষয়ে পুলিশের চারঘাট সার্কেলের এসপি প্রণব কুমার বলেন, ‘আমি নতুন জয়েন করেছি। তাকে আমি চিনি না। তার বিষয়ে খোজখবর নেওয়া হবে। তার বিরুদ্ধে যদি কোন ওয়ারেন্ট থেকে থাকে তাকে অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে। এছাড়াও কেউ যদি আলিম কালুর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেন তবে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে এ্যাকশন নেওয়া হবে।’

বাংলার বিবেক/  জি আর

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 BanglarBibek
Customized BY NewsTheme