1. admin@zzna.ru : admin@zzna.ru :
  2. md.masudrana2008@gmail.com : admi2017 :
  3. info.motaharulhasan@gmail.com : motaharul :
  4. email@email.em : wpadminne :

পবিত্র মাহে রমজান শ্রেষ্ঠ সময়

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ, ২০২২
  • ১৬০ বার

অনলাইন ডেস্ক : চাঁদের বারো মাসের মাঝে পবিত্র মাহে রমজান শ্রেষ্ঠ মাস। এ মাসে পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছে। এ মাসে রয়েছে কদরের মহিমান্বিত রাত। হাজার মাস থেকেও শ্রেষ্ঠ সেই একটি রাত। রমজান মাস রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। রাসুল (সা.) বলেন, প্রথম দশক রহমত, দ্বিতীয় দশক মাগফিরাত এবং তৃতীয় দশক জাহান্নাম থেকে নাজাত ও মুক্তি। এই মাসকে সবর ও ধৈর্যের মাসও বলা হয়েছে প্রিয় নবীর হাদিসে।

দিনে রোজা ও রাতে তারাবি ও তাহাজ্জুদের আমল করে মুসলিম উম্মাহ এ মাসের প্রতিটি দিন। রমজান মাসে মুসলিম নর-নারী অনেক আমল করেন। কিন্তু এ মাসের প্রধান আমল হচ্ছে সিয়াম সাধনা। সিয়াম তথা রোজার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। রাসুল (সা.) রজব মাসের চাঁদ ওঠার পর থেকেই দোয়া করতেন, হে আল্লাহ তুমি আমাদের বরকত দাও রজব ও শাবান মাসে, পৌঁছে দাও রমজানে। দু’মাস আগ থেকে রমজানের জন্য দোয়া করতেন, এ থেকেই রমজান মাসের গুরুত্ব বুঝতে পারা যায়। রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে প্রতিটি সুস্থ সবল সক্ষম ও সাবালক নর-নারীর উপর।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার। [সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩] রমজানের সিয়াম সাধনার মাধ্যমে তাকওয়ার গুণ অর্জন করা যায়। তাকওয়া ও সবরের গুণ অর্জনের জন্য রমজানুল মুবারক সত্যি মোক্ষম সময়।

নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত যিকির তেলাওয়াত ও অন্য আরও বহু আমল রয়েছে ইসলামে। কিন্তু এই সব আমলের ভেতর রোজার বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। অন্য কোনো ইবাদতে রোজার সেই বিশেষত্ব নেই। রাসুল (সা.) বলেন, ‘মানুষের প্রতিটি নেক আমলের সাওয়াব দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়, রোজা ছাড়া, রোজার সাওয়াব অন্যান্য আমলের সাওয়াবের মত নয়। রোজা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, রোজা আমার জন্য, আমি নিজ হাতে এর প্রতিদান দিব। কারণ রোজাদার আমার সন্তুষ্টির জন্য খাওয়া দাওয়া ও মনের সব চাহিদা পরিহার করে। [বুখারি ও মুসলিম]

এই হাদিসে দেখা যাচ্ছে, প্রতিটি আমলের প্রতিদান দশ থেকে নিয়ে সাতশ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। রোজার প্রতিদানের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন হিসাব, কতগুণ বাড়ানো হবে তা না বলে আল্লাহ রোজার সম্পর্কে ঘোষণা দিয়েছেন- ‘রোজা আমার জন্য, আমি নিজে এর প্রতিদান দিব।’ সুবহানাল্লাহ।

‘রোজা আমার জন্য’-এ কথার অর্থ কী? প্রতিটি আমলই তো আল্লাহর জন্য, তাহলে রোজার কথা আল্লাহ এভাবে পৃথক করে বললেন কেন? অন্য সব আমলের সঙ্গে তুলনা করলেই এর রহস্য বুঝতে পারা যায়। রোজার অর্থই হচ্ছে মনের সব চাহিদা ও রিপুর তাড়না থেকে বিরত থাকা। সব হারাম থেকে যেমন, হালাল বস্তু থেকেও বিরত থাকতে হয় রোজাদারদের। মজাদার সুস্বাদু খাবার ও পানীয় এবং অন্যান্য সব চাহিদা থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। সেহরি থেকে নিয়ে ইফতার পর্যন্ত এভাবে দীর্ঘ আত্মনিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকার বিষয়টি অন্য কোনো ইবাদতে নেই।

হজের ইহরাম বাঁধার পরও কিছু বিষয় ত্যাগ করতে হয়, কিন্তু তখন খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করার বিধান নেই। নামাজেও খাওয়া-দাওয়া নিষেধ আছে কিন্তু তা সামান্য সময়ের জন্য। একমাত্র রোজায় এভাবে ত্যাগ করতে হয় সব মনের চাহিদা। মনের চাহিদাগুলো বর্জন করতে পারা সামান্য কথা নয়। পার্থিব কোনো স্বার্থে নয়, কেবল মহান আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে রোজাদার এভাবে পানাহার বর্জন করে। প্রচণ্ড গরমে পিপাসায় এক ফোটা পানিও পান করে না। একটা দানাও মুখে দিতে পারে না। সিয়াম সাধনার এই বৈশিষ্ট্য সত্যি অনন্য। এ জন্যই আল্লাহ বলেন, রোজা আমার জন্য..।

তাছাড়া অন্য সব আমলে ইখলাস ও নিষ্ঠা নষ্ট হতে পারে, রোজায় ইখলাস নষ্ট হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নামাজ পড়ার সময় যদি কেউ মনে মনে ভাবে- লোকে দেখে আমাকে নামাজি বলবে- তাহলে তার নামাজ হয় না। রোজা রেখে কেউ লোক দেখাতে পারে না। আত্মপ্রদর্শনীর সুযোগ নেই সিয়াম সাধনায়। লোক চক্ষুর অন্তরালে থেকে সে রোজা ভাঙতে পারত, গোপনে এক গ্লাস পানি পান করলে পৃথিবীর কেউ জানতে পারত না, তা সত্ত্বেও রোজা না ভেঙ্গে সারাদিন এভাবে সিয়াম সাধনায় থাকা ঈমানদার নর-নারীদের ইখলাস ও নিষ্ঠার মজবুত দলিল। রোজা রেখে কেউ ভণ্ডামি করতে পারে না। নামাজ পড়ে হজ করে ভণ্ডামি করা যেতে পারে কিন্তু রোজা এক নির্মল খাঁটি আমল। এ জন্যই মহান আল্লাহ বলেন, রোজা কেবলই আমার জন্য, আমি নিজ হাতে এর প্রতিদান দিব। সত্যি, রোজা রমজান কেবল আল্লাহর জন্য।

কিন্তু কেবল না খেয়ে থাকার নাম রোজা নয়। অনেকে মনে করেন, উপোস থাকলেই রোজা হয়ে যায়। এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। রমজান মাসে হালাল খাবার যখন হারাম হলো, তখন হারাম বস্তু থেকে বেঁচে থাকা কতটা আবশ্যক তা আর ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। রাসুল (সা.) আমাদেরকে সতর্ক করে বলে গিয়েছেন, ‘অনেক রোজাদারের উপোস থাকা ছাড়া কিছুই অর্জিত হয় না।’ [ইবনু মাজাহ, হাদীস নং ১৬৯০] রাসুল (সা.) একবার রোজাদার দুই নারী সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন, ‘এরা দুজন হালাল খাবার থেকে বিরত ছিল সত্য, কিন্তু হারাম থেকে বিরত থাকেনি। তারা রোজা রেখে গীবত করেছে, মানুষের মাংস খেয়েছে..। [মুসনাদু আহমাদ ৫/৪৩১]

এই গরমে রোজা রাখায় কষ্ট আছে। কিন্তু এর পুরস্কারও আছে বিরাট। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ। এক আনন্দ হচ্ছে ইফতারের সময়, অপর আনন্দ যখন সে তার মহান প্রতিপালকের সাক্ষাৎ লাভ করবে। [বুখারি ও মুসলিম]

রোজার দুটি পুরস্কারের একটি এই দুনিয়ায়। অপরটি পরকালে। পরকালে মহান আল্লাহ নিজ হাতে তাকে পুরস্কৃত করবেন। আর এই দুনিয়ায়ও রোজার সীমাহীন উপকার রয়েছে। শারীরিক মানসিক আধ্যাত্মিক ও অন্য বহুবিধ উপকার আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা সিয়াম সাধনায় নিহিত রেখেছেন।

প্রতিনিয়ত আল্লাহর কত নিয়ামত আমরা ভোগ করি, কখনও নিয়ামতগুলোর কদর করি না। এক লোকমা খাবার বা এক গ্লাস পানির কী মূল্য তা কি আমরা কখনও বোঝার চেষ্টা করি? রমজানে রোজা রেখে প্রতিটি ফোটা পানি ও প্রতিটি দানা খাবারের মূল্য কিছুটা হলেও অনুধাবনের সুযোগ তৈরি হয়। সংযমের শিক্ষা লাভ হয়, সবর ও ধৈর্যের অনুশীলন হয় মাসব্যাপী। এমন অজস্র উপকারিতা রয়েছে সিয়াম সাধনায়।

দু’দিন বাদেই শুরু হচ্ছে রহমত বরকত ও মাগফিরাতের মাস রমজানুল মুবারক। পবিত্র মাহে রমজানে আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুন্দরভাবে সিয়াম সাধনার তাওফিক দান করুন। আমিন।

বাংলার বিবেক /এম এস

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 BanglarBibek
Customized BY NewsTheme