1. admin@zzna.ru : admin@zzna.ru :
  2. md.masudrana2008@gmail.com : admi2017 :
  3. info.motaharulhasan@gmail.com : motaharul :
  4. email@email.em : wpadminne :

নতুন বাজেটে ব্যয় বাড়ল ১৪%

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ২০২২
  • ২৩৯ বার

অনলাইন ডেস্ক : মহামারীর পর যুদ্ধের বাস্তবতায় দাঁড়িয়েও উন্নয়নের হারানো গতিতে ফেরার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুন অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদের সামনে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত এই ব্যয় বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের (৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা) চেয়ে ১৪.২৪ শতাংশ বেশি। টাকার ওই অংক বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১৫.২৩ শতাংশের সমান।

বিদায়ী অর্থবছরে মুস্তফা কামালের দেওয়া বাজেটের আকার ছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটের ১২ শতাংশ বেশি এবং জিডিপির ১৭.৪ শতাংশের সমান।

বৃহস্পতিবার বিকালে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। তার আগে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর ওই প্রস্তাবে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

গতবছর বাজেট দিতে গিয়ে জীবন ও জীবিকার কঠিন সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা করতে হয়েছিল অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামালকে। এবার তার সামনে নতুন সংকট নিয়ে হাজির হয়েছে ইউক্রেইন যুদ্ধের জেরে বিশ্ব বাজারে অস্থিরতার চ্যালেঞ্জ।

তবে মহামারীর ধাক্কা বেশ ভালোভাবেই সামাল দিতে পারায় অর্থমন্ত্রী এবার সরকারের উন্নয়ন দর্শনে মনোযোগ ফেরাতে চান। তার এবারের বাজেটের শিরোনাম ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন।’

বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, “আমাদের অর্থনীতির প্রাণশক্তি হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি এবং দৃঢ় ও সাহসী নেতৃত্ব। সংগত কারণেই কোভিড-১৯ ও ইউক্রেন যুদ্ধ উদ্ভূত অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবেলা করে দেশের সর্বস্তরের জনগণের জীবন-জীবিকা এবং সর্বোপরি ব্যাপক কর্মসৃজন ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এনে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা এবারের বাজেটে প্রাধান্য পাবে।

“বিগত দুই অর্থবছরে আমরা যেভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে করোনা মোকাবেলা করে দেশের অর্থনীতিকে মূল গতিধারায় ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলাম, অনুরূপভাবে আগামী অর্থবছরেও ইউক্রেন সংকট উদ্ভূত বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রাখব।”

কোভিড সংক্রমণ এড়াতে গত দুই বছর বাজেট অধিবেশন বসেছিল স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়ির মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থায়। সদস্যদের সবার একসঙ্গে অধিবেশনে যোগ দেওয়ার সুযোগ হয়নি, বাদ দেওয়া হয়েছিল অনেক আনুষ্ঠানিকতাও।

এবার বেশিরভাগ কড়াকড়ি কমানো হয়েছে, তবে সংসদে ঢোকার জন্য করোনাভাইরাস পরীক্ষায় নেগেটিভ সনদ থাকা এবারও বাধ্যতামূলক।

২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের আগের বাজেটগুলোতে উন্নয়ন খাত বরাবরই বেশি গুরুত্ব পেয়ে আসছিল। কিন্তু মহামারীর ধাক্কায় গত দুইবছর সেই ধারায় কিছুটা ছেদ পড়ে।

ইউক্রেইন যুদ্ধের জেরে এবার বিশ্বের অনেক দেশে মন্দার ঝুঁকি থাকলেও বাজেটের আকার বাড়িয়ে পরিকল্পনা সাজানোর পুরনো ধারায় যতি দেননি মুস্তফা কামাল।

৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেটে এবার উন্নয়ন ব্যয় ১৭ শতাংশ বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা।

এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। এরই মধ্যে এডিপি অনুমোদন করা হয়েছে।

এবার পরিচালন ব্যয় (ঋণ, অগ্রিম ও দেনা পরিশোধ, খাদ্য হিসাব ও কাঠামোগত সমন্বয় বাদে) ধরা হয়েছে ৪ লাখ ১১ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত অনুন্নয়ন বাজেটের চেয়ে প্রায় ১২.২১ শতাংশ বেশি।

এর মধ্যে ৮০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা যাবে সরকারের ঋণের ‍সুদ পরিশোধে, যা মোট অনুন্নয়ন ব্যয়ের প্রায় ২০ শতাংশ।

মহামারীর ধাক্কা সামলে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল হতে শুরু করেছিল গতবছরই, তাতে আমদানি বাড়ায় সরকারের জমানো ডলারের ওপর চাপ তৈরি হয়। রপ্তানি বাড়লেও আমদানির মত অতটা না বাড়ায় এবং রেমিটেন্সের গতি ধীর হয়ে আসায় কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়।

এর মধ্যে এ বছরের শুরুতে ইউক্রেইনে যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্বজুড়ে খাদ্য আর জ্বালানির দাম বাড়তে শুরু করে। মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকায় ডলার বাঁচাতে সরকার কৃচ্ছ্রের পথে হাঁটতে শুরু করে।

রাজস্ব আহরণে এনবিআর বিদায়ী অর্থবছরের লক্ষ্যের চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে থাকলেও কামাল আশা করছেন, নতুন অর্থবছরের সম্ভাব্য ব্যয়ের প্রায় ৬৪ শতাংশ তিনি রাজস্ব খাত থেকে পাবেন।

তার প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব খাতে আয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এই অংক বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত রাজস্ব আয়ের ১১.৩১ শতাংশ বেশি।

এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে কর হিসেবে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা আদায় করা যাবে বলে আশা করছেন কামাল। ফলে এনবিআরের কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে ৭ শতাংশের মত। টাকার ওই অংক মোট বাজেটের ৫৪.৫৬ শতাংশের মত।

এছাড়া বৈদেশিক অনুদান থেকে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে বাজেট প্রস্তাবে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটে মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা, প্রতিবার সংশোধনে তা কমানো হলেও এবার তা হয়নি।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, “চলতি অর্থবছরের মার্চ, ২০২২ পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯.৪৩ শতাংশ। রাজস্ব আদায়ের এ সন্তোষজনক প্রবৃদ্ধি বিবেচনায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা মূল বাজেটের সমান অর্থাৎ ৩ লক্ষ ৮৯ হাজার কোটি টাকা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এবারই প্রথম যে, সম্পূরক বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রায় কোনো হ্রাস করা হয়নি।”

২০২০-২১ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। সংশোধনে তা ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।

নতুন অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রী যে বাজেট প্রস্তাব সংসদের সামনে তুলে ধরেছেন, তাতে আয় ও ব্যয়ের সামগ্রিক ঘাটতি থাকছে রেকর্ড ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৫.৫ শতাংশের সমান।

সাধারণত ঘাটতির পরিমাণ ৫ শতাংশের মধ্যে রেখে বাজেট প্রণয়নের চেষ্টা হয়। তবে টাকা যোগানোর চাপ থাকায় গত তিন বছর ধরেই তা সম্ভব হচ্ছে না।

বরাবরের মতই বাজেট ঘাটতি পূরণে অর্থমন্ত্রীকে নির্ভর করতে হবে অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক ঋণের ওপর।

তিনি আশা করছেন, বিদেশ থেকে ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা ঋণ করে ওই ঘাটতি তিনি মেটাবেন।

অভ্যন্তরীণ খাতের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে রেকর্ড ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আরও ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরা হয়েছে বাজেটে।

মহামারীর মধ্যেই বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটে ৭ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। ৯ মাসের প্রাক্কলনের ভিত্তিতে অর্থবছর শেষে তা ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ হবে বলে সরকার আশা করছে।

আর অর্থমন্ত্রী আশা করছেন, তার নতুন বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারলে মূল্যস্ফীতি ৫.৬ শতাংশের মধ্যে আটকে রেখেই ৭.৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি পাওয়া সম্ভব হবে।

বাংলার বিবেক /এম এস

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 BanglarBibek
Customized BY NewsTheme