অনলাইন ডেস্ক: ঈদ এলেই দোয়া কবুলের মর্যাদার রাত ঈদের রাতকেই মানুষ ভুলে যায়। ইসলামের প্রধান ইবাদত নামাজের কথা ভুলে যায়। কোরবানির দাওয়াত ও আনন্দ উৎসবে নামাজে গাফেল হওয়া যাবে না। আবার অনেকে নামাজ পড়লেও নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলতপূর্ণ কাজগুলোও ভুলে যায়। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। নামাজ ও নামাজের গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়গুলো ভুলা যাবে না; সেগুলো কী?
নামাজ ঈমানের পর মানুষের প্রথম এবং প্রধান ইবাদত। নামাজের একটি বিধান হলো তা জামাতের সঙ্গে আদায় করা। জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা ওয়াজিব বা আবশ্যক।
জামাতে নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
কোনো এক নামাজে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিছু লোককে পেলেন না। তখন তিনি বললেন, ‘আমার ইচ্ছে হয়, কাউকে কাঠ-খড়ি সংগ্রহ করতে বলি। তারপর আজান দিতে বলি। তারপর কাউকে নামাজ পড়াতে বলি। অতপর আমি তাদের কাছে যাই যারা জামাতে আসে না এবং কাঠ-খড়ি দিয়ে তাদেরকেসহ বাড়িঘর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেই।’ (বুখারি, মুসলিম)
জামাতে নামাজের ফজিলত বর্ণনা প্রিয়নবি বলেছেন
একাকি নামাজ আদায়ের চেয়ে জামাতে নামাজ আদায়ে রয়েছে সাতশ’ গুণ বেশি মর্যাদা। (বুখারি, মুসলিম)
ইশা ও ফজর নামাজের জামাতের গুরুত্ব
> হজরত উবাই ইবনে কা‘ব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে ফজরের নামায পড়ালেন। সালাম ফিরিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, অমুক কি (জামাতে) এসেছে? লোকেরা বলল, ‘জী না’। তারপর আরেকজনের নাম নিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, অমুক কি আছে? লোকেরা বলল, ‘জী না’। তিনি বললেন, এ দুই নামাজ (ইশা ও ফজর) মুনাফেকদের জন্য আদায় করা সবচেয়ে কঠিন। তোমরা যদি জানতে যে, এই দুই নামাজে কী পরিমাণ সওয়াব নিহিত রয়েছে, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে (জামাতে) অংশগ্রহণ করতে।’ (আবু দাউদ, ইবনে খুজায়মা)
ইশা ও ফজর নামাজের গুরুত্ব বেশি হওয়ার কারণ হলো এ সময়ে মানুষ পরিবারের লোকদের সঙ্গে একান্তে সময় কাটায় কিংবা বিশ্রাম করে। ফলে জামাত দুটিতে মানুষের অবহেলা ও গাফলতি বেশি হয়ে থাকে। তাই হাদিসে এ দুই ওয়াক্তের প্রতি বেশি উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করা হয়েছে।
তাকবিরে উলা ও প্রথম কাতারে অংশগ্রহণের ফজিলত
জামাতে নামাজ আদায়ের সময় তাকবিরে উলা তথা প্রথম তাকবির থেকে জামাতে অংশ গ্রহণ করা ও প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর ফজিলত অনেক বেশি। হাদিসে এসেছে-
‘জামাতের প্রথম কাতার (সম্মান ও মর্যাদার দিক থেকে) ফেরেশতাদের কাতারের অনুরূপ। তোমরা যদি জানতে যে, এটা কত মর্যাদাপূর্ণ তাহলে এর জন্য প্রতিযোগিতা করতে।’
মুসলিম উম্মাহর উচিত জামাতে নামাজ আদায়ে আগে থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করা আবশ্যক। যেন ধীরস্থির ভাবে মসজিদে গিয়ে যথাযথভাবে সুন্নাত নামাজ আদায় করে প্রথম কাতারে তাকবিরে উলার সঙ্গে নামাজ আদায় করা যায়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঈদের আনন্দেও জামাতে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। নামাজের ফজিলত ও মর্যাদা অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
Leave a Reply