1. admin@zzna.ru : admin@zzna.ru :
  2. md.masudrana2008@gmail.com : admi2017 :
  3. info.motaharulhasan@gmail.com : motaharul :
  4. email@email.em : wpadminne :

ইসলাম দেশ সেবায় যেসব দিকনির্দেশনা দেয়

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ১০০ বার
ইসলাম দেশ সেবায় যেসব দিকনির্দেশনা দেয়
ফাইল ফটো

ধর্ম ডেস্ক: মুমিনরা সব সময় দেশের কল্যাণ চায়। কখনো দেশের অকল্যাণ চায় না। দেশের কল্যাণে কোরআনে মুমিনদের দায়িত্ববোধ, সতর্কতা ও দোয়া শেখানো হয়েছে। দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব যদিও রাষ্ট্রের, সেখানে মানুষের সতর্কতা ও দায়িত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ খুবই জরুরি। তাই সুনাগরিক হিসেবে মুসলমানের দায়িত্ব হলো আল্লাহর নিদের্শনার ভিত্তিতে জাতীয় স্বার্থরক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকা। যেমনটি আল্লাহ ঘোষণা করেছেন-

وَ اعۡتَصِمُوۡا بِحَبۡلِ اللّٰهِ جَمِیۡعًا وَّ لَا تَفَرَّقُوۡا ۪ وَ اذۡکُرُوۡا نِعۡمَتَ اللّٰهِ عَلَیۡکُمۡ اِذۡ کُنۡتُمۡ اَعۡدَآءً فَاَلَّفَ بَیۡنَ قُلُوۡبِکُمۡ فَاَصۡبَحۡتُمۡ بِنِعۡمَتِهٖۤ اِخۡوَانًا ۚ

‘তোমরা সবাই আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধোরো এবং পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হইয়ো না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কোরো, তোমরা ছিলে পরস্পর শত্রু এবং তিনি তোমাদের হৃদয়ে প্রীতির সঞ্চার করেন, ফলে তাঁর অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত  ১০৩)

দেশের কল্যাণে, দেশের নিরাপত্তা, সেবা ও ভারসাম্য রক্ষায় যথাযথ দায়িত্ব পালন, সতর্ক থাকা ও দেশের জন্য দোয়া করা প্রতিটি মুমিন মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব। যেভাবে এ দায়িত্ব পালন করতে হবে; তাহলো-

১. দেশের জন্য দোয়া করা

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দেশের শান্তি ও নিরপত্তা কামনার দোয়া করার উপদেশ দিয়ে কোরআনে পাকে আয়াত নাজিল করেছেন-

رَبِّ اجْعَلْ هَـذَا الْبَلَدَ آمِنًا وَاجْنُبْنِي وَبَنِيَّ أَن نَّعْبُدَ الأَصْنَامَ

উচ্চারণ : ‘রাব্বিঝআল হাজাল বালাদা আমিনাও ওয়াঝনুবনি ওয়া বানিয়্যা আন-না’বুদাল আচনাম।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৩৫)

অর্থ : হে (আমার) প্রভু! এ জনপদকে আপনি শান্তিময় করে দিন। আর আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে মূর্তি পূজা থেকে দূরে রাখ।’

رَبِّ اجۡعَلۡ هٰذَا بَلَدًا اٰمِنًا وَّ ارۡزُقۡ اَهۡلَهٗ مِنَ الثَّمَرٰتِ مَنۡ اٰمَنَ مِنۡهُمۡ بِاللّٰهِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ؕ

উচ্চারণ : ‘রাব্বিঝআল হাজা বালাদান আমিনাও ওয়ারযুক আহলাহু মিনাছছামারাতিমান আমানা মিনহুম বিল্লাহি ওয়াল ইয়াওমিল আখিরি।’

‘(স্মরণ করো, যখন ইবরাহিম বলেছিলেন), হে আমার প্রতিপালক! এটাকে নিরাপদ শহর করুন। আর এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ পরকালে ঈমান রাখে তাদের ফলমূল দ্বারা জীবিকা প্রদান করুন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১২৬)

২. দেশের প্রতি ভালোবাসা

দেশ প্রেম ঈমানের অঙ্গ। মুমিনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে দেশকে ভালোবাসা। কেননা নবি-রাসুলগণ নিজ নিজ মাতৃভূমিকে ভালাবাসতেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ মাতৃভূমি মক্কাকে বেশি ভালোবসতেন বলেই সংঘটিত হয়েছে মক্কা বিজয়। মহান আল্লাহ নবিজিকে মাতৃভূমি মক্কায় ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দেন এভাবে-

اِنَّ الَّذِیۡ فَرَضَ عَلَیۡکَ الۡقُرۡاٰنَ لَرَآدُّکَ اِلٰی مَعَادٍ ؕ

‘নিশ্চয়ই যিনি আপনার জন্য কোরআনকে বিধান করেছেন তিনি আপনাকে অবশ্যই জন্মভূমিতে ফিরিয়ে আনবেন।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ৮৫)

৩. শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা

মুমিনের দায়িত্ব হচ্ছে সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কাজ না করা। বরং সব সময় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা। মহান আল্লাহর নির্দেশও এমনই-

وَ لَا تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ بَعۡدَ اِصۡلَاحِهَا وَ ادۡعُوۡهُ خَوۡفًا وَّ طَمَعًا ؕ اِنَّ رَحۡمَتَ اللّٰهِ قَرِیۡبٌ مِّنَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ

‘শান্তি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তোমরা জমিনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি কোরো না। ’ (সুরা আরাফ : আয়াত ৫৬)

৪. অন্যের সম্পদের নিরাপত্তায় সতর্ক থাকা

মানুষ সাধারণত অপরাধ কর্মের অনুঘটক, তাই ইসলাম মানুষকে অন্যের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নষ্ট হয় এমন সব কাজ থেকে বিরত থাকতে সতর্ক নির্দেশ দিয়েছেন। মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন-

وَ لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ

‘তোমরা পরস্পরের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ কোরো না। ’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৮)

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও এ ব্যাপাবের কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের জীবন, সম্পদ ও সম্ভ্রম পরস্পরের জন্য নিষিদ্ধ। ’ (বুখারি ১০৫)

৫. দেশের উন্নয়ন করা

প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব হলো দেশ ও জাতির সার্বিক উন্নয়নে কাজ করা। কেননা জাতির উন্নয়নের চাবিকাঠি আল্লাহ তার হাতেই দিয়ে রেখেছেন। আল্লাহ তাআলা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে ঘোষণা দেন-

اِنَّ اللّٰهَ لَا یُغَیِّرُ مَا بِقَوۡمٍ حَتّٰی یُغَیِّرُوۡا مَا بِاَنۡفُسِهِمۡ

‘আল্লাহ কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থার পরিবর্তন করে না, যতক্ষণ না তারা নিজ অবস্থা নিজে পরিবর্তন করে।’ (সুরা রাদ : আয়াত ১১)

৬. পরিবেশ রক্ষা করা

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপর নির্ভর করছে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ। ইসলাম প্রতিটি নাগরিককে পরিবেশ রক্ষায় সচেতন হতে বলে। এ জন্য ইসলাম অনর্থক বৃক্ষ নিধন, পশু-পাখি হত্যা, জলাধার নষ্ট করা থেকে বিরত থাকতে দিকনির্দেশনা দেয় ইসলাম। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-

ما من رجل يغرس غرسا إلا كتب الله له من الأجر قدر ما يخرج من ثمر ذلك الغراس

‘কোনো ব্যক্তি যখন গাছ লাগায়, উক্ত গাছে যত ফল হবে, তার আমলনামায় সেই ফল পরিমাণ সওয়াব লিপিবদ্ধ হবে।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৩৫৬৭)

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَغْرِسُ غَرْسًا، أَوْ يَزْرَعُ زَرْعًا، فَيَأْكُلُ مِنْهُ طَيْرٌ أَوْ إِنْسَانٌ أَوْ بَهِيمَةٌ، إِلاَّ كَانَ لَهُ بِهِ صَدَقَةٌ

‘যে কোনো মুসলমান ফলবান গাছ রোপণ করে কিংবা কোন ফসল ফলায়, আর তা থেকে পাখি কিংবা মানুষ বা চতুষ্পদ জন্তু আহার গ্রহণ করে, তবে তা তার পক্ষ হতে সদকা বলে গণ্য হবে।’ (বুখারি ২৩২০)

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় খুবই গুরুত্ব দিয়েছেন। যা দেশের জন্য খুবই জরুরি। হাদিসে পাকে এসেছে-

إِنْ قَامَتْ عَلَى أَحَدِكُمُ الْقِيَامَةُ، وَفِي يَدِهِ فَسِيلَةٌ فَلْيَغْرِسْهَا

‘যদি কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার আগ মুহূর্তেও তোমাদের কারো হাতে একটি চারাগাছ থাকে, তাহলে সে যেন তা রোপণ করে দেয়।’ (মুসনাদে আহমাদ ১২৯০২)

৭. রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করা

দেশের সব জাতীয় সম্পদ রক্ষা করা প্রতিটি মুমিন মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব। হরজত ওমর ইবনে আবদুল আজিজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি রাষ্ট্রীয় কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অর্থে জ্বালানো প্রদীপ নিভিয়ে দিতেন। আর বলতেন, ‘আমি মুসলমানের সেবায় নিয়োজিত ছিলাম, তাই তাদের সম্পদ দিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়েছিলাম। এখন তুমি আমার অবস্থা জানতে চেয়েছ, তাই আমি আমার ব্যক্তিগত অর্থে প্রদীপ জ্বালালাম। ’ (আল ইকতিসাদুল ইসলামি ২৫৬)

৮. স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকা

দেশের স্বাধীনতা-সার্ভভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকে মুমিনের একান্ত কাজ। আল্লাহর জমিনে দেশের সীমানা পাহারায় নিযুক্ত ব্যক্তির মর্যাদাও অনেক বেশি। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জাহান্নামের আগুন দুটি চোখকে স্পর্শ করবে না। আল্লাহর ভয়ে যে চোখ কান্না করে এবং আল্লাহর রাস্তায় যে চোখ (নিরাপত্তার জন্য) পাহারা দিয়ে নিদ্রাহীন রাত পার করে। ’ (তিরমিজি ১৬৩৯)

পাশাপাশি দেশের সুনাগরিক হিসেবে মুসলমানের দায়িত্ব হলো আল্লাহর নিদের্শনার ভিত্তিতে জাতীয় স্বার্থরক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকা। যেভাবে আল্লাহ ঘোষণা করেন-

وَ اعۡتَصِمُوۡا بِحَبۡلِ اللّٰهِ جَمِیۡعًا وَّ لَا تَفَرَّقُوۡا ۪ وَ اذۡکُرُوۡا نِعۡمَتَ اللّٰهِ عَلَیۡکُمۡ اِذۡ کُنۡتُمۡ اَعۡدَآءً فَاَلَّفَ بَیۡنَ قُلُوۡبِکُمۡ فَاَصۡبَحۡتُمۡ بِنِعۡمَتِهٖۤ اِخۡوَانًا ۚ

‘তোমরা সবাই আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধোরো এবং পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হইয়ো না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কোরো, তোমরা ছিলে পরস্পর শত্রু এবং তিনি তোমাদের হৃদয়ে প্রীতির সঞ্চার করেন, ফলে তাঁর অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১০৩)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দেশের সেবা করার তাওফিক দান করুন। দেশের জন্য দোয়া করার তাওফিক দান করুন। দেশের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 BanglarBibek
Customized BY NewsTheme