1. admin@zzna.ru : admin@zzna.ru :
  2. md.masudrana2008@gmail.com : admi2017 :
  3. info.motaharulhasan@gmail.com : motaharul :
  4. email@email.em : wpadminne :

পশু-পাখির পরিচর্যা ইবাদত

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৩
  • ৫৫ বার
পশু-পাখির পরিচর্যা ইবাদত
পশু-পাখির পরিচর্যা ইবাদত

মিজানুর রহমান টনি: কোরআন ও হাদিসে প্রাণিজগৎ নিয়ে ইসলামের নির্দেশনা অত্যন্ত সুবিন্যস্ত। পশু-পাখির অধিকার রক্ষায় ইসলাম নির্দিষ্ট আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। প্রাণীদের অধিকার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি শরয়ি বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। ইসলামের দৃষ্টিতে এই পৃথিবীতে মানুষের পরেই প্রাণিজগতের স্থান।

প্রাণিজগেক পৃথক জাতিসত্তার স্বীকৃতি দিয়ে কোরআন বলছে : ‘পৃথিবীতে বিচরণশীল যত প্রাণী আছে আর যত পাখি দুই ডানা মেলে উড়ে বেড়ায়, তারা সবাই তোমাদের মতো একেক জাতি…’ (সুরা আনআম, আয়াত ৩৮)
পবিত্র কোরআনে বিক্ষিপ্তভাবে অসংখ্য আয়াতে প্রাণিজগতের প্রসঙ্গ এসেছে। এর বাইরেও পৃথকভাবে বিভিন্ন প্রাণীর নামে অনেকগুলো সুরার নামকরণ করা হয়েছে। যেমন সুরা বাকারা (গাভি), সুরা আনআম (উট, গরু, বকরি), সুরা নাহল (মৌমাছি), সুরা নামল (পিপীলিকা), সুরা আনকাবুত (মাকড়সা), সুরা ফিল (হাতি) ইত্যাদি। এসব নামকরণ থেকে প্রাণিজগতের প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সুস্পষ্ট ফুটে ওঠে।

পশু-পাখির প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি খাবারদাবার ও প্রয়োজনে ব্যবহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ইসলাম এগুলোকে প্রকৃতি ও পৃথিবীর সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। কোরআনের বক্তব্য দেখুন : ‘প্রাণিকুল সৃষ্টির (অন্যতম) কারণ হলো, এগুলোতে তোমরা আরোহণ করে থাকো আর এগুলো সৌন্দর্যের প্রতীক।’ (সুরা নাহল, আয়াত ৮)
নিম্নে প্রাণিজগতের অধিকার নিয়ে আলোচনা করা হলো—

পশু-পাখির পরিচর্যা ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত : ইসলাম ধর্ম মতে, পশু-পাখির প্রতি নম্রতা প্রদর্শন ইবাদতের পর্যায়ভুক্ত।

হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘একবার এক পিপাসাকাতর কুকুর কূপের পাশে ঘোরাঘুরি করছিল। পিপাসায় তার প্রাণ বের হওয়ার উপক্রম হয়ে গিয়েছিল। হঠাৎ বনি ইসরাঈলের এক ব্যভিচারী নারী তা দেখতে পায়। সে নিজের পায়ের মোজা খুলে কুকুরটিকে পানি পান করায়। এ কারণে তার অতীত পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।
’ (বুখারি, হাদিস : ৩৪৬৭)
পশু-পাখিকে কষ্ট দেওয়া গুনাহের কাজ : হাদিসের ভাষ্য মতে, পশু-পাখিকে কষ্ট দেওয়া গুনাহের কাজ। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘একজন নারী একটি বিড়ালকে বেঁধে রেখেছিল। সে তাকে খাবার দিত না আবার ভূখণ্ডে বিচরণ করে খাবার সংগ্রহের সুযোগও দিত না। এ কারণে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৩১৮)

পশু-পাখির অনিষ্ট ক্ষমাযোগ্য : পশু-পাখির যেহেতু বোধশক্তি নেই, ভালো-মন্দ পার্থক্য করার ক্ষমতা নেই, তাই পশু-পাখির মাধ্যমে মানুষ বা সম্পদের কোনো ক্ষতি হলে এর ক্ষতিপূরণ দিতে হয় না। তবে এগুলোর সঙ্গে মালিক বা রাখাল থাকলে জরিমানা দিতে হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘চতুষ্পদ জন্তুর অনিষ্ট ক্ষমাযোগ্য।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৯১২)

গৃহপালিত পশুকে যথাসময়ে খাবার ও পানীয় দেওয়া : যখন গৃহপালিত পশু বা পাখির পিপাসা হয়, তখন খাবার ও পানীয়র ব্যবস্থা করতে হবে। কেননা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘প্রাণী মাত্রকেই পানি পান করানোর মধ্যে সওয়াব আছে।’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ১৭৫৮৪)

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যেকোনো প্রাণীর ওপর দয়া করার মধ্যেও সওয়াব আছে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০০৯)

খাবারের প্রয়োজনে হালাল পশু-পাখি জবাই করা বৈধ : হালাল পশু-পাখি খাবারের প্রয়োজনে জবাই করা বৈধ। কিন্তু জবাই করার সময় দয়া প্রদর্শন করতে হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ প্রত্যেক বিষয়ে তোমাদের ওপর ‘ইহসান’ অত্যাবশ্যক করেছেন; সুতরাং তোমরা যখন জবাই করবে, দয়ার সঙ্গে জবাই করবে; আর তোমাদের সবার যেন তার ছুরি ধার দিয়ে নেয় এবং তার জবেহকৃত প্রাণীকে কষ্ট না দেয়।” (মুসলিম, হাদিস : ৫১৬৭)

প্রাণিকূলকে অহেতুক কষ্ট না দেওয়া : প্রাণিজগেক অহেতুক কষ্ট দেওয়া যাবে না—চাই অভুক্ত রাখার মাধ্যমে অথবা প্রহার করার মাধ্যমে অথবা সাধ্যের বাইরে বোঝা চাপানোর মাধ্যমে অথবা অঙ্গহানির মাধ্যমে অথবা আগুনে পোড়ানোর মাধ্যমে। কেননা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘এক নারীকে একটি বিড়ালের কারণে শাস্তি দেওয়া হয়েছে—সে বিড়ালটিকে একাধারে বেঁধে রাখায় মারা গিয়েছিল, যার কারণে সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। যখন সে তাকে আটকে রেখেছিল, তখন সে তাকে না খাদ্য ও পানীয় দিয়েছে, না তাকে জমিনের পোকামাকড় খাওয়ার জন্য ছেড়ে দিয়েছে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩২৯৫)

ক্ষতিকর প্রাণী হত্যা করা বৈধ : ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের জন্য ক্ষতিকর প্রাণী হত্যা করা বৈধ। যেমন—হিংস্র বা পাগলা কুকুর, বাঘ, সাপ, বিচ্ছু, ইঁদুর ইত্যাদি। কারণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘পাঁচ ধরনের প্রাণী বেশি অনিষ্টকারী। এদের হারাম শরিফের বাইরে ও ভেতরে হত্যা করা যায়: সাপ, চিত্রা কাক, ইঁদুর, পাগলা কুকুর ও চিল।’ (বুখারি, হাদিস : ৩১৩৬)

অনুরূপভাবে বিচ্ছু হত্যা করার বিষয়টিও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বিশুদ্ধভাবে বর্ণিত হয়েছে।

গবাদি পশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা : গবাদি পশুর মধ্যে যেন রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে না পড়ে এ জন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘অসুস্থ পশুকে যেন সুস্থ পশুর মধ্যে নিয়ে যাওয়া না হয়।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৭৭১)

পশু-পাখির ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করা : সাহাল ইবনে হানজালিয়্যা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন একটি উটের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, যার পেট পিঠের সঙ্গে লেগে গেছে। তিনি বলেন, তোমরা এসব বোবা চতুষ্পদ প্রাণীর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কোরো। তোমরা তাতে আরোহণ করলে সুন্দরভাবে কোরো এবং তা আহার করলেও ভালোভাবে কোরো।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৫৪৮)

মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 BanglarBibek
Customized BY NewsTheme