মিজানুর রহমান টনি: মহান আল্লাহর দেওয়া অমূল্য নেয়ামত মা-বাবা। মহান আল্লাহ তাঁদের বিশেষ সম্মান দিয়েছেন। তাঁদের সম্মানের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে আল্লাহর ইবাদত করার পাশাপাশি তাঁদের সঙ্গে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আপনার রব আদেশ দিয়েছেন তিনি ছাড়া অন্য কারো ইবাদত না করতে ও মা-বাবার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে।
’ (সুরা : লুকমান, আয়াত : ১৪)পবিত্র হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, কোনো এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করল, আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় কাজ কোনটি? তিনি বলেন, সময় হলে নামাজ পড়া। সে আবার প্রশ্ন করল, এরপর কোন কাজটি সর্বাধিক প্রিয়? তিনি বলেন, মা-বাবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার। (মুসলিম, আয়াত : ৮৫)
মা-বাবা যদি অমুসলিমও হন, তবু তাঁদের সঙ্গে সদাচরণ করতে হবে। তাঁদের আদর-আপ্যায়ন করতে হবে। আসমা (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেন, আমার জননী মুশরিকা।
তিনি আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তাঁকে আদর-আপ্যায়ন করা জায়েজ হবে কি? তিনি বলেন, ‘তোমার জননীকে আদর-আপ্যায়ন কোরো।’ (মুসলিম, হাদিস : ১০০৩)
তবে তাঁরা যদি এমন কাজ করতে আদেশ করেন, যা করলে আল্লাহর সঙ্গে শরিক করতে হয়, বা কুফরি করতে হয়, তবে সেই কাজ করার অবকাশ নেই। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি মানুষকে নির্দেশ দিচ্ছি তার মা-বাবার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে। তবে ওঁরা যদি তোমার ওপর বল প্রয়োগ করেন আমার সঙ্গে এমন কিছু শরিক করতে, যার সম্পর্কে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তুমি তাঁদের মেনো না।’ (সুরা আল-আনকাবুত, আয়াত : ৮)
আল্লাহ আরেক জায়গায় বলেন, ‘তোমার মা-বাবা যদি তোমাকে পীড়াপীড়ি করেন আমার সমকক্ষ দাঁড় করাতে, যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তুমি তাঁদের কথা মেনো না, তবে পৃথিবীতে তাঁদের সঙ্গে বসবাস করবে সত্ভাবে।’ (সুরা : লুকমান, আয়াত : ১৫)
অর্থাৎ যার মা-বাবা অমুসলিম এবং তাকেও অমুসলিম হওয়ার আদেশ করেন, এ ব্যাপারে তাঁদের আদেশ পালন করা জায়েজ নয়, কিন্তু দুনিয়ায় তাঁদের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখে চলতে হবে। বলা বাহুল্য, আয়াতে ‘মারুফ’ বলে তাঁদের সঙ্গে আদর-আপ্যায়নমূলক ব্যবহার বোঝানো হয়েছে।
তাই আসুন, আমরা মা-বাবাকে সম্মান করি, যথাসম্ভব তাঁদের খিদমত করি, তাঁদের জন্য সর্বদা দোয়া করি। তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।
Leave a Reply