1. admin@zzna.ru : admin@zzna.ru :
  2. md.masudrana2008@gmail.com : admi2017 :
  3. info.motaharulhasan@gmail.com : motaharul :
  4. email@email.em : wpadminne :

নবী-জীবনী: নবীজি (সা.)-এর দুঃখের বছর

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ২০২১
  • ২৮৩ বার

নবুয়তের দশম বছর ছিল মহানবী (সা.)-এর জন্য ‘আমুল হুজুন’ বা দুঃখের বছর। এ বছর তিনি তাঁর অন্যতম আশ্রয় চাচা আবু তালিব এবং নিবেদিতপ্রাণ স্ত্রী খাদিজা (রা.)-কে হারান। কুরাইশদের সম্মিলিত বয়টক বৃদ্ধ আবু তালিবের স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ৮০ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু ঘটে। চাচা আবু তালিবের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এলে মহানবী (সা.) তাঁর শিয়রে উপস্থিত হয়ে বলেন, ‘চাচা! আপনি শুধু বলুন, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তাহলে কিয়ামতের দিন আমি আপনার জন্য সুপারিশ করতে পারব।’ অন্যদিকে আবু জাহেল ও আবদুল্লাহ ইবনে উমাইয়া তাঁকে স্বধর্মে অটুট থাকতে উদ্বুদ্ধ করে। শেষ পর্যন্ত তিনি বলেন, ‘আমি আবদুল মুত্তালিবের ধর্মের ওপর রয়েছি।’ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের মত হলো, আবু তালিব ঈমানহারা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। যদিও তিনি এতটুকু বলেছিলেন—তুমি মানুষকে যে বিষয়ে আহ্বান করো তাকে (আল্লাহ ছাড়া উপাস্য নেই—এ কথা) সত্য ও যৌক্তিক মনে করি। তবে ঈমান প্রমাণের জন্য তা যথেষ্ট নয়। (সিরাতে মোস্তফা : ১/২৬৪ ও ২৬৬; খাতামুন নাবিয়্যিন, পৃষ্ঠা : ৩৯৩)

আবু তালিবের মৃত্যুর পর মহানবী (সা.) প্রিয় চাচার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী ও মুমিনদের জন্য সংগত নয়, যখন এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে নিশ্চিতই তারা জাহান্নামি।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ১১৩)

আবু তালিবের মৃত্যুর পর মহানবী (সা.) সেখানে প্রবেশ করেন এবং তাঁর ডান পাশ চারবার ও বাঁ পাশ তিনবার স্পর্শ করেন। এরপর দুঃখভারাক্রান্ত কণ্ঠে বলেন, ‘হে চাচা! আপনি আমাকে শৈশবে প্রতিপালন করেছেন, এতিম হিসেবে আমার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন এবং বড় হওয়ার পর সাহায্য করেছেন। আল্লাহ আপনাকে আমার পক্ষ থেকে উত্তম প্রতিদান দিন।’ তিনি তাঁর খাটিয়ার সামনে চলেন এবং তা বহন করেন।’ (আর-রাসুল, পৃষ্ঠা : ৯৩)

আবু তালিব তাঁর জীবদ্দশায় মহানবী (সা.)-এর প্রতি যে স্নেহ, মমতা ও ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন, তার বিনিময়ে আল্লাহ পরকালে তাঁর শাস্তি লাঘব করবেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সে (আবু তালিব) জাহান্নামে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত আগুনে আছে। যদি আমি না হতাম তাহলে সে জাহান্নামের একেবারে নিম্ন স্তরে থাকত।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৮৮৩)

চাচা আবু তালিব ছিলেন মহানবী (সা.)-এর জন্য ঢালস্বরূপ। তিনি কুরাইশের অত্যাচার প্রতিরোধ করতেন এবং তাঁকে সর্বাত্মক সহায়তা করতেন। ফলে আবু তালিবের মৃত্যুর পর তাঁর ওপর এমন অত্যাচার শুরু হলো, যা করার সাহস কুরাইশরা আগে কখনো করেনি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আবু তালিব মারা যাওয়ার আগে কুরাইশরা আমার সঙ্গে এমন খারাপ আচরণ আগে কখনো করেনি।’ (সিরাতে ইবনে হিশাম, পৃষ্ঠা : ১০৫)

আবু তালিবের মৃত্যুর কিছুদিনের মধ্যে খাদিজাতুল কুবরা (রা.) ৬৫ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। তাঁর মৃত্যুও মহানবী (সা.)-এর জন্য ছিল অত্যন্ত পীড়াদায়ক। হাদিসে এসেছে, ‘খাদিজা (রা.) যখন ইন্তেকাল করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে যায়। এরপর তিনি আশেয়া (রা.)-কে বিয়ে করেন।’ (মাজমাউল জাওয়ায়িদ, হাদিস : ১৫২৮৮)

খাদিজা (রা.)-কে মহানবী (সা.) কখনো ভোলেননি। এমনকি আয়েশা (রা.), যিনি আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর স্ত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন, তিনিও খাদিজা (রা.)-কে ঈর্ষা করতেন। আয়েশা (রা.) একবার খাদিজা (রা.)-এর ব্যাপারে ঈর্ষা প্রকাশ করলে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কসম! তিনি আমাকে তাঁর (খাদিজার) চেয়ে উত্তম কাউকে দেননি। কেননা যখন মানুষ আমার সঙ্গে কুফরি করেছিল তখন খাদিজা আমার ওপর ঈমান এনেছিল, যখন মানুষ আমাকে অবিশ্বাস করেছিল তখন সে আমাকে সত্যায়ন করেছিল, যখন মানুষ আমাকে বঞ্চিত করেছিল তখন সে আমাকে তার সম্পদে অংশীদার করেছিল, তাঁর গর্ভ থেকে আল্লাহ আমাকে সন্তান দান করেছেন; অন্য কোনো স্ত্রীর গর্ভ থেকে আমাকে কোনো সন্তান দেওয়া হয়নি।’ (মুসনাদে আহমাদ)

ঐতিহাসিকরা একমত যে হিজরতের তিন বছর আগে আবু তালিব ও খাদিজা (রা.)-এর মৃত্যু হয়। তাঁরা দুজন মতান্তরে তিন দিন, ৩৫ দিন ও দুই মাস ব্যবধানে মারা যান। কার মৃত্যু আগে হয়েছে তা নিয়েও মতভিন্নতা রয়েছে। তবে প্রসিদ্ধ মত হলো, আবু তালিব আগে মারা যান। (আর-রাসুল, পৃষ্ঠা : ৯৩)

গ্রন্থনা : আতাউর রহমান খসরু

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 BanglarBibek
Customized BY NewsTheme