অনলাইন ডেস্ক : বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের রৌমারীতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। শনিবার (১১ জুন) থেকে জিঞ্জিরাম, কালো ও দর্নি নদী দিয়ে ঢলের পানি নামতে শুরু করে।
রোববার (১২ জুন) দুপুর পর্যন্ত সময়ে নেমে আসা অব্যাহত থাকায় আকস্মিক এই বন্যায় রৌমারী সদর, যাদুরচর, বন্দবেড় ও শৌলমারী-এই ৪টি ইউনিয়নের ৩২টি গ্রামের প্রায় ৪ হাজার পরিবারের ২০ হাজারের মতো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব গ্রামে নৌকা এবং কলার গাছের তৈরি ভেলা ছাড়া যাতায়াত করা যাচ্ছে না। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
এ ছাড়া তলিয়ে গেছে তলিয়ে গেছে ৮৭ হেক্টর বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। এর মধ্যে ৪৫ হেক্টর পাট, ১৮ হেক্টর আউশ ধান, ১৯ হেক্টর সবজি ও ৫ হেক্টর তিল ক্ষেত তলিয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী।
এদিকে আকস্মিক বন্যায় পুরাতন যাদুরচর, চর লালকুড়া, খেওয়ারচর ও পাহাড়তলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বর এবং আশেপাশে পানি ঢোকায় শ্রেণি পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম।
রৌমারীর যাদুরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী রোববার দুপুরের দিকে মোবাইল মারফত জানান, ঢলের পানি নেমে আসা অব্যাহত আছে। ফলে গ্রামগুলোতে ঢুকে পড়া পানির উচ্চতাও বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ।
তিনি আরও জানান, আকস্মিক বন্যায় তার ইউনিয়নের উত্তর আলগারচর, দক্ষিণ আলগারচর, বাগানবাড়ী, গুচ্ছগ্রাম, চর লাঠিয়ালডাঙ্গা, লাঠিয়ালডাঙ্গা, বিক্রিবিল, খেওয়ারচর, চর খেওয়ারচর, বকবান্ধা, বকবান্ধা নামাপাড়া, বকবান্ধা ব্যাপারীপাড়া, দুবলাবাড়ী, বকবান্ধা চরপাড়া, চর রসুলপুর ও লালকুড়াসহ ২০টির মতো গ্রামে আড়াই সহস্রাধিক পরিবারের ১৫ হাজারের মতো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
একইভাবে রৌমারী সদর ইউনিয়নের বাওয়াইরগ্রাম, ঝাউবাড়ি, দুবলাবাড়ী, রতনপুর, কলাবাড়ি, বড়াইবাড়ি, চুলিয়ারচর, উত্তর বারবান্দা, ইজলামারী, ফুলবাড়ি, ভুন্দুরচর, নয়ারচর, গোয়ালগ্রাম, চান্দারচর, খাটিয়ামারী, মাদারটিলা, পূর্ব ইজলামারী, কড়াইকান্দি এবং বন্দবেড় ও শৌলমারী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ৫ হাজারের মতো মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।
পুরাতন যাদুরচর গ্রামের অধিবাসী আব্দুস সামাদ জানান, আকস্মিকভাবে,পাহাড়ি ঢল নেমে আসায় গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে গ্রামীণ সড়কগুলো। নৌকা বা ভেলা ছাড়া বাড়ি থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না।স্কুলে পানি উঠায় ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না।
এ প্রসঙ্গে রোববার (১২ জুন) দুপুরে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, আকস্মিক বন্যা আক্রান্ত এলাকা ঘুরে দেখেছেন। এ অবস্থায় সার্বিক বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে। তথ্য পাওয়ার পর সার্বিক পরিস্থিতি জেলা প্রশাসককে অবগত করা হবে।
বাংলার বিবেক /এম এস
Leave a Reply