নিজস্ব প্রতিবেদক:  অশ্রু বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আড়াই বছরের প্রেম এবং বিয়ের ইতি টানলেন এক প্রেমিক যুগল এবং নব-দম্পত্তী।

গতকাল মঙ্গলবার (১২ জুলাই) এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, পাবনা থেকে রাজশাহী সরকারী মহিলা পড়তে আসা (ছদ্দনাম) সুম্মিতা নামের এক যুবতীর (শিক্ষার্থী) সাথে রাজশাহী মহানগরীর কাজলা এলাকার (ছদ্দনাম) সঞ্জিব নামের এক যুবকের (শিক্ষার্থী) সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

আড়াই বছরের প্রেমের সম্পর্ক চলাকালীন সময় তাদের উভয় পরিবারের প্রায় সকল সদস্যের মাঝে বিষয়টি জানাজানি হয়। এতে যুবতীর পরিবার থেকে যুবকের সাথে বিবাহ্রে বিষয়ে মত-বিরোধ দেখা হয়। এরই মধ্যে যুবককে প্রত্যাখানের জন্য যুবতীকে চাপ দেয় তার পরিবাররের লোকজন।

কিন্তু এই কপোত-কপোতী কেউ কাউকে ছাড়া বাঁচবেনা। তাই তারা সিদ্ধান্ত নেয় প্রেমের ইতি টেনে দ্রুত সময়ের বিবাহ্ করে সংসার শুরু করবে। এমন সিদ্ধান্তের পর তারা কোট ম্যারেজ করেন এবং বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখেন।

গত জুন মাসে সুস্মিতা সঞ্জিবকে জানায়, সে তার বাবার বাড়ি যাবে। ফিরে এসে কোন মন্দিরে ধর্মিয় রিতি মেনে বিবাহ্ সম্পন্ন করে সংসার শুরু করবে।

হাসিমুখে বিদায় দেয় সঞ্জিব। বাড়ি গিয়ে সুম্মিতা নিয়মিত ফোন দেয় সঞ্জিবকে। তাদের আলাপ চারিতাও অব্যাহত থাকে।

হটাৎ ২৮ জুলাই সুম্মিতা ফোন দেয়া বন্ধ করে দেয় সঞ্জিবকে। আকাশ ভেঙ্গে পড়ে মাথায়। কি এমন হলো সুম্মিতা ফোন দেয়া বন্ধ করে দিলো ? কোন অসুখ হলো নাতো ? নাকি কোন বিপদ ? বিপদ বলতে তার বাড়ির লোকজন তাকে আটকে দিলো নাকি ? নাওয়া খাওয়া হারাম সঞ্জিবের। সঞ্জিব সিদ্ধান্ত নিলো সে পাবনা যাবে। কারন তার যে কোন উপাই নেই। তাকে জানতেই হবে কি হয়েছে সুম্মিতার।

মঙ্গলবার (১২ জুলাই) বিকেলে প্রাইভেটকার ভাড়া করে পাবনায় যায় সঞ্জিব। এ সময় তার সাথে ছিলো বড় ভাই, ছোট বোন জামাই ও প্রতিবেশি এক ভাই। সুস্মিতার বাড়ি গিয়ে দেখা গেল তাদের সকল আত্নীয় স্বজন সেখানে উপস্থিত।

সুস্মিতার বাবা জানালেন, আমেরিকা প্রবাসি এক ছেলের সাথে সুস্মিতার আর্শিবাদ হয়ে গেছে। বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হয়েছে। আর সব কিছুই হয়েছে সুস্মিতার ইচ্ছায়। তখনও বিশ্বাস করতে নারাজ সঞ্জিব। সে বলে আমি সুস্মতার মুখে শুনবো। হাজির করা হলো সুস্মিতাকে।

সুস্মিতা যা বল্লো তা শুনে সবাই হতভম্ব। সে সাফ জানালো বিয়ে তার নিজের পছন্দেই হচ্ছে। সে যে আড়াই বছর প্রেম করেছে তা তার ভুল ছিলো।

ওই সময় শুভ সুস্মিতাকে তাদের সম্পর্ক নিয়ে কিছু প্রশ্ন করে, তার জবাবও সে স্বাভাবিক ভাবেই দেয়। শেষে সুস্মিতা সঞ্জিবের উদ্দেশ্যে বলে, তুমি চাইলে আমি বিষ খাবো। তবুও তোমাকে আমি বিয়ে করতে পারবোনা বলে প্রস্থান করে সে।

এ সময় মেয়ের মা, খালা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, সঞ্জিব তুমি বাবা আমাদের মাফ করে দাও। তুমি যা চাও আমরা দেবো। শুধু মেয়েকে দিতে পারবোনা। একই সময় অশ্রু বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আড়াই বছরের প্রেম, ভালবাসা এবং বিয়ের ইতি টানেন প্রেমিক সঞ্জিব।

বাংলার বিবেক/এমআরটি